এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের অপহরণের অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়িতে। মঙ্গলবার রাতে পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্জাবিপাড়ার ঘটনা। পরিবারের অভিযোগ, ওই রাতেই ৫ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে বাড়িতে। বুধবার সকালে গুরুনানক সরণিতে অপহৃত ব্যক্তি কিসান আগরওয়ালের বাড়ি যান পুলিশকর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণের একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশ ও পরিবারের দাবি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দু’টি মিটিংয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন কিসান। একটি সিএ সংস্থা চালান তিনি। হিলকার্ট রোডে সেটির অফিস। স্ত্রী শিশির ছাড়াও রয়েছে এক ছেলে, এক মেয়ে এবং মা রয়েছেন কিসানের পরিবারে। শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (পূর্ব) সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। একটি মামলাও রুজু করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়, সাধারণত রাত সাড়ে সাতটা থেকে ৮টার মধ্যেই বাড়ি ফেরেন কিসান। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ স্ত্রীকে ফোন করে কিসান জানান, তিনি নিজে কোথায় রয়েছেন বুঝতে পারছেন না। কেউ বাড়িতে গেলে তাকে ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে দিতেও বলেন তিনি। তারপরেই ফোন কেটে যায়। বাড়ির লোকের দাবি, মঙ্গলবারই রাত এগারোটা নাগাদ অন্য নম্বর থেকে ফোন করে হিন্দিতে কিসানের মুক্তির জন্য পাঁচ কোটি টাকা চাওয়া হয়।
এ দিন ওই বাড়িতে যান দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার, ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মানিক দে। রঞ্জন বলেন, ‘‘পুলিশকে বলেছি, ঘটনার যথাযথ তদন্ত করতে। টাকার জন্য অপহরণ কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়।’’ এ দিনই বিজেপি জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়ালও যান কিসানের বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারটি ভেঙে পড়েছে। ঘটনার দ্রুত তদন্ত চাই।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পাড়ায় নির্বিবাদী মানুষ হিসেবে পরিচিত কিসানের সঙ্গে কারও কোনও ঝামেলা ছিল না।
পুলিশ সূত্রের খবর, কিসানের সমস্ত কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরনোর সময় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশ পেয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টা পর্যন্ত কিসানের হোয়াটসঅ্যাপ অন ছিল। কোন কোন লোকেশনে তাঁর মোবাইল ঘুরেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশকর্তারা। এ দিন এলাকায় যান নর্থবেঙ্গল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জয় টিব্রেওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের পাশে রয়েছি। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথাও বলেছি। দ্রুত কিনারা করতে হবে পুলিশকে।’’