কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ধন্দে বিরোধীরা। —ফাইল চিত্র
কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন ৫০ শতাংশ বুথে ‘ওয়েব কাস্টিং’য়ের ব্যবস্থা থাকবে— বুধবার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনা। জেলাশাসকের ওই ঘোষণার জেরে নির্বাচনের দিন ওই সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২৫ নভেম্বর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এই কেন্দ্রে ২৭০টি বুথ রয়েছে। জেলাশাসকের ঘোষণা অনুযায়ী, নির্বাচনের দিন তার মধ্যে ১৩৫টি বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তার মাধ্যমে ক্যামেরার সাহায্যে কলকাতা ও দিল্লির দফতরে বসে সে সব বুথের নির্বাচন প্রক্রিয়া সরাসরি দেখতে পারবেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা। ভোট চলাকালীন কোনও সমস্যা বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে সরাসরি সেই ভিডিও দেখে কমিশনের আধিকারিকেরা জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিতে পারবেন।
জেলা নির্বাচন দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সাধারণ ভাবে নির্বাচনের দিনে যে সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকে না, কমিশনের নজরদারিতে সে সব বুথে ভোট প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়।’’
উপনির্বাচনের আগে ইতিমধ্যেই কালিয়াগঞ্জে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছেছে। জওয়ানেরা কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় টহল ও নাকা তল্লাশিও শুরু করেছেন।
বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের অভিযোগ, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক বুথে তৃণমূল বুথ দখল করে ছাপ্পাভোট দেয়। উপনির্বাচনের আগে পুলিশ ও প্রশাসন সে সব বুথ এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টহলে পাঠায়নি।’’ নির্মলের কথায়, ‘‘তৃণমূলের নির্দেশেই জেলা প্রশাসন উপনির্বাচনে কালিয়াগঞ্জের ১৩৫টি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বদলে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করার ছক কষেছে। তৃণমূলকে ভোট লুটের ব্যবস্থা করে দিতেই ওই ছক কষা হয়েছে। ৫০ শতাংশ বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করার সরকারি ঘোষণাতেই তা স্পষ্ট হয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল ভোট লুটের চেষ্টা করলে বাসিন্দারাই তা রুখে দেবেন।
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের বক্তব্য— ‘‘যে সমস্ত বুথে নিরাপত্তা ঢিলেঢালা থাকে, সে সব বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জের ৫০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না করে তৃণমূলকে সুবিধা করে দেওয়া হবে কিনা, সেটাই প্রশ্ন।’’
জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনা অবশ্য বলেন, ‘‘কে কী অভিযোগ করছেন, তা নিয়ে মন্তব্য করব না। নির্বাচনের দিন কত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, তা বলা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হচ্ছে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম একজোট হয়ে তৃণমূলকে হারাতে অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। নির্বাচনে বাসিন্দারা তার জবাব দেবেন।’’