জেপি নড্ডা। ফাইল চিত্র।
পাহাড় থেকে সমতল— উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জনজাতি ও ভাষাভাষী গোষ্ঠীর উপর ভরসা করে লোকসভা ভোটের মতোই ফল পেতে মরিয়া বিজেপি। রাজবংশী, কামতাপুরী থেকে গোর্খা ভাষাভাষী, নমঃশূদ্র, বাঙালি থেকে অবাঙালি— এইসব ভোটারদের বড় অংশকে পাশে পাওয়ার কৌশল স্থির করতে শিলিগুড়ি আসছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।
রবিবার দলীয় সূত্র থেকে পাওয়া খবর, দিল্লি থেকে আজ, সোমবার সকালেই দিনভর সফরে শিলিগুড়ি আসার কথা নড্ডার। সকালে উত্তরবঙ্গের আট জেলার সাংগঠনিক বৈঠক সেরে বিকেলে তাঁর দিল্লি ফেরার কথা। দলের নেতানেত্রীদের পাশাপাশি সাতজন সাংসদের মনোনীত বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, ভাষাভাষীর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন নড্ডা। ‘ভার্চুয়াল’ এই বৈঠক থাকার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। এ দিন বিকেলে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায় শিলিগুড়ি এসেছেন। ভারতী ঘোষ, অরবিন্দ মেননেরা শহরে আগেই এসে পড়েছেন। দলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রথীন বসু বলেছেন, ‘‘অমিত শাহের আসার কথা ছিল। এ বার আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি আসছেন। পুরোটাই দলীয় সাংগঠনিক বৈঠক।’’
বিজেপি সূত্রের খবর, আজ সকাল ৯টা নাগাদ নড্ডা দিল্লি থেকে বাগডোগরা পৌঁছবেন। এর পর তিনি এশিয়ান হাইওয়ের নৌকাঘাট মোড়ে এসে পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করবেন। সেখান থেকে তিনি যাবেন মহাবীরস্থানের আনন্দময়ী কালীবাড়িতে। সেখানে পুজো দিয়ে উঠবেন সেবক রোডের দুই মাইলের বিলাসবহুল হোটেলে। সেখানেই পরপর বৈঠকের কর্মসূচি। আট জেলার সভাপতি, তিন সাধারণ সম্পাদক, কোঅর্ডিনেটর, আহ্বায়ক, সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসবেন। পরে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, ভাষাভাষীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে নড্ডা দেখা করবেন। কেন্দ্রীয় স্তরে রাজ্য থেকে রাজবংশীদের ভাষা ও সংস্কৃতির বিভিন্ন স্তরে মান্যতার দাবির কথা তাঁকে জানানো হতে পারে।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছিলেন। তিনি পাহাড়ে ১৭৫ কোটি টাকা, একাধিক জনজাতি বোর্ডকে ১০ কোটি টাকা উন্নয়নের কাজ জন্য দিয়ে গিয়েছেন। এর মধ্যে নমঃশূদ্র, রাজবংশী-কামতাপুরীরাও আছেন। পাহাড়ের বাকি বোর্ডগুলিও আরও কাজের তালিকা তৈরি করে নতুন করে বরাদ্দের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ায় পরিকল্পনা নিয়েছে। তেমনি রাজার নামে মেডিক্যাল কলেজ বা পঞ্চানন বর্মার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জনজাতি ও ভাষাভাষী গোষ্ঠীর ভোট নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া বিজেপি। দলের উত্তরবঙ্গের এক নেতা জানান, লোকসভার নিরিখে উত্তরবঙ্গের ৫৪টি আসনের মধ্যে ৩৮টিতে তাঁরা এগিয়েছিলেন। নতুন করে ওই সাফল্য ধরে রাখাটাই এবার চ্যালেঞ্জ।