আকর্ষণ: পোস্টার পড়েছে কন্যাশ্রী নিয়ে হওয়া যাত্রার। নিজস্ব চিত্র
যাত্রাশিল্পে জোয়ার আনতে এ বার বেছে নেওয়া হল কন্যাশ্রীর সাফল্য। বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প। সেই কাহিনীকেই এ বার যাত্রামঞ্চে তুলে ধরছে কলকাতার একটি অপেরা। কন্যাশ্রী নিয়ে এমনিতেই সাধারণ মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে। ফলে সেই বিষয়ের উপরে তৈরি যাত্রাপালা ঘিরে আগ্রহ রয়েছে দর্শকদের। এমনই দাবি আয়োজকদের।
উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ওই যাত্রা মঞ্চস্থ করার এজেন্টের একজন উত্তম মাইতি। তিনি বলেন, “ওই পালার ১৩ দিনের মধ্যে ১২ দিনের বুকিং হয়ে গিয়েছে। বাকি একদিনের জন্য চারটি এলাকার উদ্যোক্তারা যোগাযোগ করেছেন।’’ তিনি জানান, মানুষের চাহিদা বুঝেই পালা হয়। শো’য়ের দিন বাড়ানোর ব্যাপারেও কথাবার্তা চলছে বলে জানান তিনি।
কিন্তু পালার বিষয়বস্তু নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে শাসক শিবিরের প্রচার কৌশলে এই যাত্রার আয়োজন হয়েছে। বেশিরভাগ আয়োজক কমিটিতে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের অনেকে জড়িয়ে রয়েছেন। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “কৌশলে পঞ্চায়েতের প্রচার করছে শাসকদল।” একই অভিযোগ করেছে বিজেপিও। দলের কোচবিহার শহর সভাপতি বিরাজ বসু বলেন, “ভোটের লক্ষ্যে এ ভাবে যাত্রার মঞ্চ ব্যবহার করা মানুষ ভালভাবে নেবেন না।” যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, উন্নয়নের নিরিখেই সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের পাশে থাকবেন। এই যাত্রাপালার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কন্যাশ্রী গোটা বিশ্বে বাংলাকে গর্বিত করেছে। এতে মেয়েদের শিক্ষা, স্বনির্ভরতায় উৎসাহ বেড়েছে। যারা পালাটির আয়োজন করছেন ভালই করছেন।’’
রামপুরে আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ মুকুল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “কন্যাশ্রীর বিশ্বখেতাব প্রাপ্তির আনন্দে সবাইকে সামিল করতে যাত্রাটি মঞ্চস্থ করা হচ্ছে। এটা দলমত নির্বিশেষে সবার চাহিদা।” দিনহাটার নয়ারহাট যাত্রা আয়োজক কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূল যুব নেতা মিলন সেন। তাঁর দাবি, “কন্যাশ্রীর সাফল্য মানুষ জানতে চান।’’ কন্যাশ্রীদের জন্য টিকিটে ছাড় থাকবে বলেও জানান তিনি।
উদ্যোক্তাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রায় রাজ্যের উন্নয়ন কাজের দৃশ্যায়ন থাকবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে কন্যাশ্রীর পুরস্কারপ্রাপ্তির দৃশ্যায়নও থাকবে। মঞ্চেই ফুটিয়ে তোলা হবে মুখ্যমন্ত্রীর বিমানযাত্রার ছবি। শীতের রাতের যাত্রা দাপিয়ে বেড়ায় নানা সামাজিক ও পৌরাণিক কাহিনী। সেসবকে এখন কঠিন লড়াইয়ে ফেলতে পারে কন্যাশ্রীর সাফল্যের কাহিনিও। অন্তত তেমনটাই আশা উদ্যোক্তাদের।