মোহন বসু— নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার বিকেলে শহরের শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দিরে দেশ ও দশের মঙ্গল কামনায় মহা মৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ করতে এসে মোহন বসু বলেছিলেন, ‘‘গত ৩০ বছর ধরে জলপাইগুড়ির মানুষ আমাকে দু’হাত দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে পথচলা আমার পুরসভায়। আমাকে তো মানুষ নীচে নামাননি। আমাকে বলপূর্বক দলের কিছু লোক টেনে নামিয়েছেন তাঁদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আমি থাকলে তাঁদের স্বার্থসিদ্ধি হত না। এখনও মানুষ আমাকে চান।’’
মোহন বুধবার বলেন, ‘‘চালসায় দলীয় বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সব জানিয়েছি। যা যা জানতে চেয়েছিলেন তার সুরাহা করবেন, কী করবেন না সেটা তাঁদের ব্যাপার। আমি চাওয়া-পাওয়ার জন্য আমি রাজনীতি করি না। বুধবার তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে প্রথম পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির বৈঠক আছে। আমি এখনও খবর পাইনি। আমি একটা কথা আগেও বলেছি এখনও বলছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেকের ডাকে ১০১ বার যাব কিন্তু, যাঁদের হাতে দল সুরক্ষিত নয় তাঁদের মিটিং-এ গরহাজির থাকারই চেষ্টা করব। দল দলের মতো চলছে চলুক। বিশেষজ্ঞরা আছেন দলে। তাঁরাই চিন্তা করবেন দল বাঁচবে কি না। দল রক্ষা করা তো আমার কাজ নয়।’’
বিজেপি-র জেলা যুব সভাপতি পলেন ঘোষ বুধবার এ প্রসঙ্গে বলেন, "মোহন বসু এমনিতেই নিজের দলে সম্মান পাচ্ছেন না। ওঁর এখন যদি মনে হয় এতদিন তৃণমূল দল করে ভুল করেছেন বা বিগত দিনে কোনও খারাপ কাজ করেছেন তাই পাপ মুক্ত হতে মন্দিরে গিয়ে পুজোআচ্চা করছেন। তা হলে এগুলো করা উচিত। গত ২০ বছর ধরে উনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত আছেন। ভবিষ্যৎে ওঁকে বিজেপি-তে স্বাগত জানানো হবে কি না, রাজ্য নেতৃত্ব বলতে পারবেন।’’
বুধবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্য মহিলা তৃণমূলের সম্পাদিকা সাগরিকা সেনও। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির বৈঠকে মোহন অনুপস্থিত থাকলেও আরেক ‘অনাহুত’ সাগরিকা গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে চোখে জল নিয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। অভিযোগ করেন, জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার তাঁকে পছন্দ করেন না। কোনও বৈঠকে ডাকেন না। ফোনও ধরেন না। সাগরিকার অভিযোগে, পরিকল্পনা মাফিক তাঁকে জেলা কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণকুমার বলেন, ‘‘জেলা কমিটিতে থাকলেই কাজ করা যাবে, রাজ্য কমিটিতে থাকলে কাজ করতে পারবেন না, এমনটা নয়। দল কারও ইচ্ছেয় পরিচালিত হয় না।’’ রাজ্য কমিটি যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।