আন্দোলন: পোস্টার হাতে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিল করতে হবে— এই দাবি তুলে রাতভর অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের তালা বন্ধ করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি ফার্মাসি কলেজের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব হেল্থ সায়েন্সের অধীনে রাজ্যের একমাত্র এই ফার্মাসি কলেজেই মঙ্গলবার থেকে চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল সিমেস্টার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের জেরে এ দিন জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে কলেজে বৈঠক হয়। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিকেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে দেন, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলেজে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। বিকেলে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন ছাত্রছাত্রীরা।
এ বারে করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেক ক্ষেত্রেই স্কুল-কলেজে ক্লাসে রাশ টানা হয়েছে এবং হচ্ছে। এমনকি, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে কোনও বোর্ডই স্কুলের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষাও নেয়নি। কারণ, সব ক্ষেত্রেই আশঙ্কা, এই ধরনের পরীক্ষায় সামাজিক দূরত্ব এবং অন্য বিধি বজায় রাখা কঠিন হবে। ফার্মাসি কলেজের পড়ুয়াদেরও একই আশঙ্কা। তাঁদের দাবি, এই কারণে এ বারের চতুর্থ বর্ষের ফাইনলা সিমেস্টারের পরীক্ষাটি বাতিল করতে হবে। বদলে, গত বছরের পরীক্ষার ৮০ শতাংশ ও হোম অ্যাসাইনমেন্টের ২০ শতাংশ নম্বর ধরে মূল্যায়ন করতে হবে। ৩১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতেই সোমবার সকাল থেকে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের তালা আটকে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। সোমবার সারা রাত ধরে আন্দোলন চলে।
মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিক স্বপনকুমার পাত্র, জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিপুল সিংহ প্রমুখ পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজে আসেন। দুপুরে অধ্যক্ষ সৌরভ সিংহ রায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কলেজে এসে তাঁকে পরীক্ষা করেন। আন্দোলনরত দুই ছাত্রও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ফার্মাসি ছাত্র প্রত্যুষ মাইতি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দাবির সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনও সহমত।’’ অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কলেজে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি।’’ জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের আধিকারিক স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আমরা ছাত্রছাত্রী এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিস্তারিত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’