কথায় বলে জেলের ঘানি টানা। এতদিন জলপাইগুড়ি জেলে এই সংস্কৃতি না থাকলেও এবার ফিরছে তা।
জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বৃহস্পতিবার থেকে চালু হল তেলের ঘানি৷ যদিও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ একে তেল কল বা পরিশোধিত তেল তৈরির যন্ত্র বলছেন৷ এবার থেকে সংশোধনাগারের আবাসিকরাই সর্ষে ভাঙিয়ে তেল তৈরি করবেন৷ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি সেই তেল পাঠানো হবে উত্তরবঙ্গের অন্য সংশোধনাগারেও৷ এর জন্য সর্ষে চাষও শুরু হয়ে গিয়েছে সংশোধনাগারের ভিতরে৷ ভবিষ্যতে এই তেল কেনার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষও৷
জেলে যাওয়ার সঙ্গে ঘানি টানার কথাটি দীর্ঘ দিন ধরেই প্রচলিত৷ এক সময়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের দিয়ে ঘানি টানানো হতো৷ যদিও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কর্তাদের দাবি, এখানে কোনওদিন ঘানি টানানো হতো না৷ সুপার শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুনেছি, এক সময় এখানে গম ভাঙানো হতো৷’’
যদিও জেল এখন হয়ে উঠেছে সংশোধনাগার৷ সেখানকার আবাসিকদের কোনও কাজে ব্যস্ত রাখা সংশোধনের চেষ্টারই একটি অঙ্গ। সেই কারণেই এই ব্যবস্থা বলে দাবি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের৷ শুভব্রতবাবু বলেন, এই তেল কলটি সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত৷
জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রের খবর, রাজ্যে এই মুহুর্তে প্রেসিডেন্সি জেল, দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার ছাড়াও আরও একটি সংশোধনাগারে এ ধরনের তেল কল রয়েছে৷ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে চালু হওয়া তেলকলটি রাজ্যে চতুর্থ৷ মাস খানেক আগে হরিয়ানা থেকে ১৪লক্ষ টাকা ব্যয়ে দু’টি তেল কল আসে এখানে৷ শুক্রবার তার উদ্বোধন করেন কারা দফতরের অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল কল্যাণ কুমার প্রামাণিক৷
শুভব্রতবাবু জানান, সংশোধনাগারের ভিতরে সর্ষের চাষ শুরু হলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম৷ সেজন্য টেন্ডার করে সর্ষে কেনা হবে৷ জানা গিয়েছে, এই সংশোধনাগারের তিন-চারজন আবাসিকের তেল কল চালানোর প্রশিক্ষণ রয়েছে৷ তারাই বাকিদের প্রশিক্ষণ দেবেন৷ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রে খবর, তেল কলের পর খুব শীঘ্রই এই সংশোধনাগারে বেকারি ও মুড়ি তৈরির যন্ত্রও বসতে চলেছে৷