বন্দি: রামঝোরা চা বাগানে বৃহস্পতিবার ধরা পড়ল চিতাবাঘ। নিজস্ব চিত্র
রামঝোরা চা বাগানে ফের ধরা পড়ল একটি চিতাবাঘ৷ যাকে ঘিরে ‘মানুষখেকো’ চিতা বাঘের নয়া সন্দেহ দানা বাঁধল বন দফতরের অন্দরে।
বন দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে রামঝোরা চা বাগানের পাঁচ নম্বর সেকশনে পেতে রাখা খাঁচায় একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ ধরা পড়ে। খবর পেয়ে, রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, ‘‘এদিন ধরা পড়া চিতাবাঘটির আকার সবচেয়ে বড়। তাই আমাদের সন্দেহ, এটা মানুষখেকো হতে পারে। তবে চিতাবাঘটির পায়ের ছাপ যদি মিলে যায়, তাহলেই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে এটা মানুষখেকো চিতাবাঘ।’’
গত শুক্রবার ধুমচিপাড়ায় ধরা পড়া পুরুষ চিতাবাঘটিকে ঘিরে প্রথম মানুষখেকো সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে বন দফতরের কর্তাদের অন্দরে। তার দু’দিন পর গ্যারগেন্দায় বন্দি হওয়া স্ত্রী চিতাবাঘ যেভাবে টোপ হিসাবে রাখা মানব পুতলকে ক্ষত-বিক্ষত করে তাতে সেটিকে ঘিরেও সন্দেহ বাড়ে। দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে দুটি চিতাবাঘের উপরেই চব্বিশ ঘন্টা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। ধুমচিপাড়ায় ধরা পড়া পুরুষ চিতাবাঘের পায়ের ছাপের উপর নির্ভর করে রাজ্যের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ শাখা) রবিকান্ত সিংহ জানিয়েছেন, “মানুষখেকো হিসাবে বেশি সন্দেহ ওই চিতাবাঘটিকে ঘিরেই।”
এ দিন শালকুমারহাটে বন্যপ্রাণ-মানুষ সংঘাত নিরসনের জন্য লঙ্কাপাড়ার রেঞ্জ অফিসার বিশ্বজিৎ বিষইকে পুরস্কৃত করে বন দফতর। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই বিভিন্ন চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘ-মানুষের সংঘাতের ঘটনা বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় বিভিন্ন চা বাগান এলাকায় খাঁচা পাততে শুরু করে করেন বন আধিকারিকরা। তার ফলও মিলেছে। গত দু’মাসে মাদারিহাটে মোট দশটি চিতাবাঘ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ছ’টি চিতাবাঘ ধরা পড়েছে লঙ্কাপাড়া রেঞ্জ থেকে। আর এ দিন ধরা পড়া চিতাবাঘটিকে নিয়ে, গত চারদিনে রামঝোরা চা বাগানের পাঁচ নম্বর সেকশন থেকে তিনটি চিতাবাঘ ধরা পড়ল।
একের পর এক খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ রাখার জন্য দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র প্রকল্পেও খাঁচার সংখ্যা বাড়ছে। সেখানে আগেই একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও চারটি চিতাবাঘ ছিল। নতুন দশটি যোগ হওয়ায় চিতাবাঘের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪টি। বনমন্ত্রী জানান, আগে বেশ কিছু জায়গা থেকে চিতাবাঘ বেঙ্গল সাফারিতে পাঠানো হয়েছে। ফলে ফাঁকা হয়ে যাওয়া সেই জায়গাগুলিতে এই চিতাবাঘেদের পাঠানো হবে। কোচবিহারের রসিকবিলেও তিনটি চিতাবাঘ পাঠানো হবে বলে জানান তিনি। আর যেটি চূড়ান্তভাবে “মানুষ খেকো” হিসাবে শনাক্ত হবে, সেটিকে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি অথবা অন্য কোথাও রাখার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান বনমন্ত্রী।