ফাইল চিত্র।
কখনও আর্থিক তছরুপ, কখনও আবার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে কমিটি গঠন করে তদন্ত হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, কমিটি তদন্তের রিপোর্ট পেশও করেছে। অভিযোগ, তার পরেও সেই রিপোর্টে কোনও আমল দেওয়া হয়নি। বহাল তবিয়তে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করে চলেছেন ওই সব রিপোর্টে ‘অভিযুক্ত’ শিক্ষক থেকে আধিকারিকদের একাংশ।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, তদন্ত রিপোর্ট পেশ হলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে সেগুলি ধামাচাপা পড়েছে। তদন্ত ধামাচাপার নেপথ্যেও প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগ দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বড় অংশ। অভিযোগ, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট এক অধ্যাপক নেত্রীর হস্তক্ষেপেই সবক’টি তদন্ত গতি হারিয়েছে। যদিও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তী ছেত্রীও বলেন, ‘‘আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’
বাম আমলে ২০০৭ সালে, মালদহে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। প্রথম দিকে, মালদহ কলেজ ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন চললেও পরে গৌড় কন্যা বাস টার্মিনাস এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন গড়ে ওঠে। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু করা থেকে ভবন নির্মাণে আর্থিক তছরুপের ঘটনা সামনে এসেছে। এমনকী, রুশার টাকা তছরুপ নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জড়িয়েছে। সম্প্রতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেআইনি ভাবে ১১ জনকে শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
অভিযোগগুলি সামনে আসতেই কখনও উচ্চ শিক্ষা দফতর, কখনও আবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খোদ নিজেরাই কমিটি গঠন করেছে তদন্ত করেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই সব তদন্তের পরে রিপোর্টও পেশ হয়েছে। তবে ওই পর্যন্তই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘কমিটি তদন্তের রিপোর্টে গাফিলতির কথা উল্লেখ করলেও, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাতেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে অভিযুক্তরা।’’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সজিকিউটিভ কাউন্সিল(ইসি) কমিটিতে সরকারের মনোনীত সদস্য রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এক অধ্যাপক নেত্রী। তাঁর মদতেই রিপোর্ট পেশের পরেও তদন্ত থিতিয়ে গিয়েছে।
বিজেপি নেতা পার্থসারথি ঘোষ বলেন, ‘‘গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির সঙ্গে তৃণমূলের কলকাতার নেতা, নেত্রীরা সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। তদন্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিতে তাঁদের নামও সামনে আসবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে মানুষ নেই। আর মানুষ সঙ্গে না থাকলে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে কোনও লাভ নেই।’’