বন্দে ভারত এক্রপ্রেস। — ফাইল চিত্র।
এনজেপি-হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া নিয়ে রেল সুরক্ষা বাহিনীর তদন্ত এগোল সামান্যই। ৩ জানুয়ারি হাওড়া-এনজেপি বন্দে ভারতে লাগানো ক্যামেরায় ট্রেনের কাছে চার জন সন্দেহজনক ব্যক্তির অস্তিত্ব চিহ্নিত হয়েছে। তবে ২ জানুয়ারির ঘটনায় এখনও কার্যত অন্ধকারেই রেল। তবে ট্রেনটির গার্ড, চালক, কোচ অ্যাটেন্ড্যান্ট এবং স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলছেন রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) তদন্তকারী আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, তদন্ত চলছে। তদন্ত তেমন গতি না পেলেও, বন্দে ভারত নিয়ে রীতিমতো সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
গত ২ এবং ৩ জানুয়ারি পর পর বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার অভিযোগ হয়েছে। সামসি এলাকার এক ইনস্পেক্টর পদমর্যদার আধিকারিক তদন্ত করছেন। এনজেপিতেও রেল সুরক্ষা বাহিনী তদন্তে নেমেছে। কিন্তু ২ জানুয়ারির ঘটনায় তদন্তে অগ্রগতি প্রায় শূন্য বললেই চলে। কাউকেই এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলেই বাহিনী সূত্রে খবর। ৩ জানুয়ারির ঘটনায় ট্রেনের ‘এক্সটার্নাল’ ক্যামেরা থেকে পাওয়া কিছু ছবিতে অবশ্য সন্দেহজনক চার জনকে দেখা গিয়েছে বলে বুধবার দাবি রেল সুরক্ষা বাহিনী সূত্রে। তদন্তকারীরা জানান, উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর সংলগ্ন আলুয়াবাড়ি রোড এবং ধূলাবাড়ি স্টেশনের মাঝে, ঘটনার দিন বন্দে ভারতের ক্ষতিগ্রস্ত কামরার একটু দূরে ওই চার জনের উপস্থিতি টের পেয়েছেন আধিকারিকেরা। তারা কারা এবং তারাই পাথর ছুড়েছিল কি না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। বাহিনী সূত্রে দাবি, একটি নয় ৩ জানুয়ারি দু’টি জায়গা থেকে পাথর ছোড়া হয়ে থাকতে পারে। এনজেপির অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিওরিটি কমিশনার মহম্মদ ফারুক বলেন, ‘‘তদন্তের কাজ চলছে। কিছু সূত্র মিলেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ যাত্রীদের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে। সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু তদন্ত খুব এগোচ্ছে না বলেই অভিযোগ।
সে কারণেই কি বিজেপি নেতারা একবার এনআইএ, এক বার সিআইডি-তদন্ত চাইছেন? প্রশ্ন উঠেছে। যদিও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘ঘটনায় যাত্রীরা আতঙ্কিত। তদন্ত চলছে। পাশাপাশি, জিআরপিকেও নজরদারি এবং নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।’’ ট্রেনের ভিতরে আরপিএফকেই রাখছে রেল। এ দিনই এক বিবৃতিতে এ রকম ঘটনা জানাতে সাধারণ মানুষের জন্য একটি টোল-ফ্রি নম্বর (১৩৯) চালু করে রেল। যদিও অনেকের অভিজ্ঞতা সেটিতে ফোন করলে, ‘ভুল নম্বর’ বলা হচ্ছে।
মঙ্গলবারই বালুরঘাট এবং মালদহের সভা থেকে শুভেন্দু-সুকান্তরা বন্দে ভারতের উপরে আক্রমণ নিয়ে সরব হয়েছেন। তৃণমূলের দিকে ইঙ্গিত করছে বলেও অভিযোগ তৃণমূলের। বন্দে ভারতে ঢিল ছোড়া নিয়ে বুধবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, ‘‘এ সব দুষ্কৃতীদের কাজ। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতারা এই ঘটনায় তৃণমূলকে জড়িয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছেন। কয়েক দিন আগে উত্তরপ্রদেশে উত্তর ট্রেনে হামলা বা ঢিল ছোড়া হয়েছে। বিজেপি নেতারা চুপ কেন?’’
তাঁদের দাবি, জনসমর্থন হারিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়াচ্ছে বিজেপি।