প্রতীকী ছবি।
‘সন্ত্রাস’ খুঁজতে এ দিন তুফানগঞ্জ মহকুমার একাধিক গ্রাম চষে ফেললেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। যা দেখে তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হল, বিজেপিশাসিত রাজ্যে যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেখানে ওঁরা যাচ্ছেন না কেন? বিজেপির পাল্টা দাবি, বিজেপির বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ করে লাভ হবে না।
এ দিন পশ্চিম ফলিমারির বাসিন্দা দিলীপ দাসের বাড়িতে যান কমিশনের সদস্যরা। সেখানে দিলীপ স্ত্রী সঙ্গীতা দাবি করেন, “আমার স্বামী বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। মণ্ডল কমিটিতে আছেন। অনেক দিন বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। বারবিশায় (আলিপুরদুয়ার) বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওঁকে থাকতে হচ্ছে। ফল প্রকাশের পর কিছু দিন অসমের শিবিরেও ছিলেন। এ সব কথাই কমিশনের প্রতিনিধিদের জানিয়েছি।” এলাকার অন্য এক বাসিন্দার অবশ্য দাবি, বিধানসভা ভোটের পর ওই বাড়িতে ভাঙচুর হয়নি। তবে গত ডিসেম্বরে একবার ওই বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা হয়। সঙ্গীতা অবশ্য দাবি করেছেন, ডিসেম্বরে শুধু নয় এবারেও বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।
ফলিমারি প্রত্যন্ত এলাকা। সেখানে তো বটেই, বালাভূতের মতো প্রত্যন্ত এলাকাতেও যান তাঁরা। ফলিমারিতে সঙ্গীতার সঙ্গে কথা বলার সময়ে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে ছিলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। সেখান থেকে তুফানগঞ্জে আসেন। থানাতেও সামান্য সময়ের যান। সেখান থেকে গোপালেরকুঠির উদ্দেশে রওনা হয় দলটি। মাথাভাঙা ১ ব্লকের মোহনপুর, শিকারপুর, পশ্চিমখাটের বাড়ির মতো এলাকায় কমিশনের প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা বিজেপি কর্মীদের বাড়ি যান। তুফানগঞ্জে বেশ কয়েকটি জায়গায় তৃণমূলের লোকজনও আক্রান্ত বলে অভিযোগ উঠেছিল। তেমন কোথায় তাঁরা গিয়েছিলেন কিনা, সেই প্রশ্নের অবশ্য স্পষ্ট জবাব মেলেনি।
তবে মানবাধিকার কমিশনের এই সফর নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিজেপিশাসিত রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ওঁরা বরং সে সব রাজ্যে যান। ২০১৯ সালে লোকসভার ভোটের ফল ঘোষণার পর বিজেপি সন্ত্রাস করলেও এমন কোনও দলের দেখা মানুষ পাননি।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “অনেকে মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন। তা দেখতেই দল এসেছে। অন্য কোনও রাজ্যে ভোট পরবর্তী এমন হিংসা নেই। বিজেপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে লাভ হবে না। রাজ্যের পুলিশ তো বেশি সন্ত্রাসের ঘটনাস্থল প্রতিনিধি দলটিকে দেখাচ্ছেই না।’’ পুলিশ সূত্রে এই নিয়ে বলতে চাওয়া হয়নি।