ব্লক কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে আদি-নব্য

কোনও ব্লকে দলের নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়া হলেও, বেশ কিছু ব্লকে কোনও জেলা পরিষদের সদস্যকে কমিটিতেই রাখা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

মালদহ জেলায় আদি ও নব্যের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। জানা গিয়েছে, দলের সব পক্ষকে সন্তুষ্ট রাখতে কোথাও চেয়ারম্যান, কোথাও আহ্বায়ক করে ব্লকে ব্লকে তৃণমূলের নয়া কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে নবাগতেরাই বেশি প্রাধান্য পেয়েছেন বলে দলের একাংশের অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, বেশিরভাগ ব্লকের নয়া কমিটিতেই ব্রাত্য দলের আদি নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

কোনও ব্লকে দলের নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়া হলেও, বেশ কিছু ব্লকে কোনও জেলা পরিষদের সদস্যকে কমিটিতেই রাখা হয়নি। ফলে তাঁরাও ক্ষুব্ধ। দলীয় সূত্রের খবর, কালিয়াচক-২ ব্লকের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির ওয়েবসাইটে তাঁদের ক্ষোভ জানানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, ব্লকে ব্লকে নেতা-কর্মীরা জেলা সদরে বিক্ষোভ দেখানোরও প্রস্তুতি নিয়েছেন। এমনকি, কমিটি গঠনের প্রেক্ষিতে একটি পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত সদস্য নির্দল হয়ে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন। সূত্রের খবর, সেই খবর পৌঁছেছে দলীয় সভাপতি মৌসম নুরের কাছে। এবং মৌসম নাকি তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেও চেয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বলছে, নয়া কমিটি গঠন নিয়ে ব্লকে দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে।

বুধবার তৃণমূলের জেলার ১৫টি ব্লক কমিটি ও দু’টি শহর কমিটি ভেঙে দেন মৌসম। পাশাপাশি, ইংরেজবাজার বাদে ১৪ ব্লকে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য নতুন একটি করে অস্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। ইংরেজবাজার শহর কমিটি গঠন না করলেও পুরাতন মালদহ শহর কমিটি গঠন করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, যাঁরা এলাকায় জনপ্রিয় তাঁরাই কমিটিতে আসবেন। অঞ্চল কমিটির সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে তিনটি করে নাম সুপারিশ করবেন এই ব্লকের নয়া কমিটির সদস্যরাই।

Advertisement

দলের হরিশ্চন্দ্রপুরের এক বর্ষীয়ান নেতা জানান, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ ব্লকে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে পরিবারতন্ত্র কায়েম হয়েছে। কেননা, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে তজমুল হোসেনকে। তাঁরই ভাই জম্বু রহমানকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক কমিটিতে। যদিও জম্বু হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকেরই বাসিন্দা। তাঁর প্রশ্ন, এক ব্লকের বাসিন্দাকে কী করে অন্য ব্লকের কমিটিতে নেওয়া হল। রতুয়া ১ ব্লক কমিটির সভাপতি ছিলেন ফজলুর রহমান। নয়া কমিটিতে তাঁকে রাখাই হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এসব দ্বিচারিতা।’’

কালিয়াচক ২ ব্লকের এক প্রাক্তন নেতা জানান, ‘‘আমরা শুনেছি, এলাকার বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনের সুপারিশেই ব্লক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা তৃণমূলের কমিটি না হয়ে কার্যত কংগ্রেসেরই কমিটি হয়েছে।’’ সাবিনা অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘সকলের মতামত নিয়েই কমিটি হয়েছে।’’ মৌসুম বলেন , "নতুন কমিটি গঠন নিয়ে কোথাও সে রকম ক্ষোভ বা অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ এলে আলোচনা করা হবে। দলকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement