শঙ্খধ্বনি করে আত্রেয়ী রক্ষায় পরিবেশপ্রেমীদের সাইকেল যাত্রাকে স্বাগত জানালেন গ্রামের মহিলারা। ফুল ছিটিয়ে ‘আত্রেয়ী বাঁচাও’ স্লোগান তুলে আন্দোলনে সামিল হলেন কৃষি ও মৎস্যজীবী মানুষজন।
নদী রক্ষায় জনমত তৈরি ও জল সঙ্কট নিয়ে সরকারি স্তরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত আলোচনার দাবিতে শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরে সাইকেল জাঠা বের করে আঙিনা পাখি ও পরিবেশ সুরক্ষা সমিতি।
নদীর উৎসমুখ থেকে নিচু স্তরের অববাহিকা এলাকায় দু’দিন ধরে সাইকেল চালিয়ে প্রায় ১১৬ কিলোমিটার পথ পরিক্রমার লক্ষ্য নিয়ে এ দিন শুরু হয়েছে আন্দোলন। গত মাসে আত্রেয়ীর নাব্যতা ফেরাতে বাংলাদেশের দিকে বাঁধ তুলে দেওয়ার দাবিতে ওই পরিবেশ সংস্থার তরফে ১০,০০০ বাসিন্দার গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পাঠানো হয়।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ বালুরঘাটের জলঘর অঞ্চলের ফতেপুর অটোস্ট্যান্ড থেকে গঙ্গাসাগর, চকহরিণা, চককাশি এলাকার পরিবেশপ্রেমী যুবকের দল সাইকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। বাংলাদেশের দিকে মোহনপুরে আত্রেয়ী নদী বরাবর তৈরি রাবার বাঁধ তুলে জল ছাড়ার দাবিতে তারা পোস্টার ঝুলিয়ে, স্লোগানে সরব হন। ওই সাইকেল মিছিল বালুরঘাট শহর পরিক্রমা করে চকভৃগু অঞ্চল পেরিয়ে দুপুরে বোয়ালদার অঞ্চলের কালিকাপুর এলাকায় পৌঁছলে আরও কিছু যুবক সাইকেল যাত্রায় যোগ দেন। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে দলটি আত্রেয়ীর তীর বরাবর ক্রমশ পার্বতীপুর, খাসপুর হয়ে বোল্লা অঞ্চল হয়ে যত এগিয়েছে, যাত্রাপথে সার দিয়ে দাঁড়ানো মানুষজন ফুল ছিটিয়ে শঙ্খ বাজিয়ে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছেন।
ও পারে বাঁধ দিয়ে জল নিয়ন্ত্রণের জেরে এ পারে আত্রেয়ী শুকিয়ে বিপন্ন কৃষক ও মৎস্যজীবী মানুষেরাও নদী রক্ষায় পরিবেশপ্রেমীদের সঙ্গে সরব হন। বাংলাদেশের বাঁধে আত্রেয়ী শুকিয়ে বালুরঘাট জল পাচ্ছে না বলে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় স্তরে এ বিষয়ে দু’দেশের দ্রুত আলোচনার দাবি তোলা হয় সাইকেল জাঠায়।
এ দিন বিকেলে নদীর উৎস্যমুখ সাফানগর অঞ্চলের কামদেবপুরে ৫৮ কিলোমিটার পথের যাত্রা শেষ হয়। আন্দোলনের উদ্যোক্তা পরিবেশ সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিত বসাক বলেন, ‘‘কুমারগঞ্জ হাইস্কুলে রাত্রিবাসের পর রবিবার সকালে বালুরঘাটের ডাঙি এলাকায় সাইকেল জাঠা শেষ হবে।’’