জ্বর নিয়ে তুলকালাম সংসদে

তথ্য জানাতে হবে জেই’র, দাবি দিল্লির

জাপানি এনসেফ্যালাইটিস হলে তার তথ্য ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। আইন মাফিক সেই তথ্য রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো বাধ্যতামূলক করবে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪৪
Share:

জাপানি এনসেফ্যালাইটিস হলে তার তথ্য ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। আইন মাফিক সেই তথ্য রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো বাধ্যতামূলক করবে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

সাম্প্রতিক অতীতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বারবার জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের তথ্য লুকোনোর অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীরা অভিযোগ তুললেও অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার। আজ লোকসভায় এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে আলোচনায় দাবি ওঠে, এই রোগকেও ‘নোটিফিয়েবল ডিজিস’-এর তালিকাভুক্ত করা হোক। যার অর্থ, যে কোনও ডাক্তার, সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে এই রোগী এলে তার তথ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। সেই দাবি মেনে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা বলেন, সরকার এই ব্যবস্থা করবে।

এনসেফ্যালাইটিস ১৫ বছরের কমবয়সীদের মধ্যেই বেশি হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলিতে প্রাপ্তবয়স্করাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। লোকসভায় বিতর্কের মধ্যেই নিজেদের মধ্যে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন পশ্চিমবঙ্গের তিন সাংসদ— সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অধীর চৌধুরী ও মহম্মদ সেলিম। অধীর ও সেলিম দু’জনেই উত্তরবঙ্গের সাংসদ। তাঁদের বচসা দেখে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন বলেন, অসুখ নিয়ে ঝগড়া করা উচিত নয়। শিশুরা মারা যাচ্ছে, এ দিকে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। এ নিয়ে রাজনীতি করাও ঠিক নয় বলেও মন্তব্য করেন স্পিকার।

Advertisement

অধীরের অভিযোগ ছিল, দেশের যে ১৫৭টি জেলায় এই রোগের প্রকোপ, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আটটি জেলা রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিস্থিতি মোকাবিলার মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। বহু লোক মারা যাচ্ছে। এনসেফ্যালাইটিসের সঙ্গে এখন ডেঙ্গিও মারাত্মক হারে বাড়তে শুরু করেছে। অধীরের অভিযোগের জবাবে সুদীপ বলেন, চিকণগুনিয়াই হোক বা ডেঙ্গি, রাজ্য সরকার নিজের কাজ ঠিক ভাবেই করছে। সুদীপ বলেন, ‘‘মানুষ সবই দেখছে। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে ২১১ আসনে জিতিয়েছে। এদের ক’টা আসন দিয়েছে? তাই এরা যত কম কথা বলেন, ততই ভাল।’’

সিপিএমের মহম্মদ সেলিম কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা বলছেন, টিকাকরণ হয়েছে বলে রাজ্য থেকে রিপোর্ট এসেছে। কিন্তু টিকাকরণের পরেও অসুখ হচ্ছে। যার অর্থ রিপোর্ট সঠিক ছিল না। টিকাকরণ হয়নি। উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে থাকা সব জেলাগুলিতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মেডিক্যাল কলেজ খোলা হোক।’’ সেলিমের মতে, ‘‘রাজ্য সরকার এটা করতে পারবে না। কেন্দ্রকেই করতে হবে।’’

জবাবে নড্ডা বলেন, এনসেফ্যালাইটিসের মোকাবিলায় রাজ্যকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়। কাজেই রূপায়ণের কাজটি রাজ্যের। এনসেফ্যালাইটিসের জন্য টিকাকরণ আরও বাড়াতে হবে। তবে টিকা দেওয়ার পরেও রোগ হয়েছে, এই ধরনের কোনও রিপোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে আসেনি বলে নাড্ডা জানান।

তাঁর বক্তব্য, মশাবাহিত রোগের মোকাবিলায় চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৭.৫০ কোটি টাকা রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল-এর সেন্টার তৈরি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ তিনটি রাজ্যে দীর্ঘ দিন টেকে এমন ৩০ লক্ষ মশারি বিলি হয়েছে। রাজ্যে এইমস তৈরি হয়ে গেলেও পরিস্থিতির মোকাবিলা সহজ হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর যুক্তি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement