—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ‘মগজ’ বলে পরিচিত সুশান্ত রায়, তাঁর ছেলে সৌত্রিক এবং ‘লবি’র আর এক চিকিৎসক অভীক দে-কে ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর (আইএমএ) জলপাইগুড়ির শাখার প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে সাসপেন্ড করে, সংগঠনের সব রকম কর্মসূচি থেকে দূরে রাখার প্রস্তাব কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হল। জলপাইগুড়ি আইএমএ-র কার্যনির্বাহী কমিটি ভেঙে দেওয়ার সুপারিশও পাঠানো হল কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। বুধবার সন্ধ্যায় ডাকা জলপাইগুড়ির আইএমএ-র বিশেষ সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভার পরে, আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার তরফে দাবি, প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে কাউকে বরখাস্ত করা বা কমিটি ভেঙে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত আইএমএ-র কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে ঘোষণা করতে হয়। সেই মতো জলপাইগুড়ি শাখা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছে। গত মঙ্গলবার আইএমএ-র রাজ্য শাখা সুশান্ত রায়কে সাসপেন্ড করেছিল। সুশান্ত রায় বা অভীক দে-র সঙ্গে এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজের। তবে সৌত্রিক বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে আইএমএ-র ১৪-১৫ জন সদস্য বসে বৈঠক করে অবৈধ ভাবে এ সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অথচ, সদস্য সংখ্যা আড়াইশোর মতো। ওই ১৪-১৫ জন সিসি ক্যামেরা বন্ধ করছেন সংস্থার। তার পরে চুপি সাড়ে বৈঠক করছেন কেন? যারা এ সব করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির চোখের চিকিৎসক সুশান্ত রায় দাবি করেছিলেন, তিনি কোনও চিঠি পাননি। এ দিনও সুশান্ত আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার সমাজ মাধ্যমের একটি ‘গ্রুপ’-এ দাবি করেছেন, তিনি কোনও সাসপেনশনের চিঠি পাননি, পুরোটাই একটি ‘গভীর চক্রান্ত’ হয়েছে তাঁকে বদনাম করার জন্য। আর জি কর-কাণ্ডের পরে, জলপাইগুড়ি আইএমএ-এর তরফে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়নি। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল নাগরিক সমাজ। অভিযোগ, আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার অন্দরেও ‘হুমকি ও শাসানির সংস্কৃতি’ তৈরি হয়েছিল। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর প্রতিবাদ মিছিল হবে এবং জেলার পুজো কমিটিগুলির কাছে আড়ম্বর বর্জন করে নির্যাতিতার বিচারের দাবি তোলার অনুরোধ করা হবে।
বুধবারের বৈঠকে সুশান্ত রায় বা তাঁর ছেলে সৌত্রিক উপস্থিত ছিলেন না। আইএমএ-র সভাপতি নিতাই মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে, জলপাইগুড়ি আইএমএ-এর প্রাক্তন সম্পাদক পান্থ দাশগুপ্ত বলেন, “আমরা মনে করছি, সুশান্ত রায়, সৌত্রিক রায় এবং অভীক দে-র বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি উঠছে তা সত্যি। সৌত্রিক রায়ের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ এসেছিল, ঘটনার দিন তাঁর আর জি করে উপস্থিত থাকা নিয়েও আমাদের কোনও সংশয় নেই।” বৈঠকে ছিলেন জলপাইগুড়ির চিকিৎসক তৃণমূলের বিধায়ক প্রদীপকুমার বর্মা। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল। জলপাইগুড়ি আইএমএ-এতে এমন অনেক চিকিৎসককে সদস্য করে রাখা হয়েছে, যাঁরা জলপাইগুড়ির বাসিন্দা তো ননই, জলপাইগুড়িতে কস্মিনকালে আসেনওনি। সে সব নিয়েও পরবর্তীতে আলোচনা হবে।”