শোকার্ত: বিপুলের বাবা নীরেন রায়। ছবি: নারায়ণ দে
সীমান্ত সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে বাড়ির বড় ছেলের। ছোট ছেলে বকুল রায় মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। তা হলেই সীমান্তে শান্তি আসবে।
বৃহস্পতিবার দিনটা বিন্দিপাড়ায় বিপুল রায়ের বাড়ির লোকেদের অপেক্ষায় কেটে গিয়েছে। শেষে বেলা দু’টো নাগাদ সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ দিন আর দেহ বাড়ি আনা হবে না। রাতে হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনিতে বিপুলের দেহ পৌঁছয়। বিন্দিপাড়ায় দেহ আসবে আজ, শুক্রবার।
এ দিন সকাল থেকেই ভিড় ছিল বিপুলের বাড়ি ঘিরে। গ্রামের লোকজন জড়ো হয়েছিলেন গ্রামের মাঠে। ওই মাঠেই বাঁধা হচ্ছে মঞ্চ। সেখানে থাকবে দেহ, শ্রদ্ধা জানাবেন সাধারণ মানুষ। শুধু বিন্দিপাড়া নয়, দূরের গ্রাম মজিদখানা, ভাটিবাড়ি, টটপাড়া, আলিপুরদুয়ার শহর থেকেও মানুষ আসতে শুরু করেন। জেলা পুলিশের তরফ থেকেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
বিপুল যে ক্লাবের সদস্য, তার সদস্যরা সকাল থেকে ভিড় করে ছিলেন বাড়ির সামনে। ক্লাবের সম্পাদক রাজীব রায় জানান, বিপুল খুব ভলিবল খেলতেন। ছুটিতে এলেই ক্লাবে চলে আসতেন। প্রতি বছর ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়। কয়েকবার ট্রফি কেনার টাকাও বিপুল দিয়েছেন। রাজীব বলেন, ‘‘কত আড্ডা দিয়েছি ওঁর সঙ্গে। আর আজ দাঁড়িয়ে আছি দেহের জন্য! এর মত বেদনার আর কী হতে পারে?’’
বড় ছেলে সীমান্ত সংঘর্ষে প্রাণ হারালেও ছোট ছেলেকে সুযোগ পেলে সেনাবাহিনীতে পাঠাতে চান বাবা নীরেন রায়। ছোট ছেলে বকুল এ দিন ভুটান থেকে ফিরেছেন। সেখানে চাকরি করেন তিনি। প্রায় সব সময়েই ছিলেন দিদি বা বাবার পাশে। তিনি বাবার কথা শুনে বলেন, ‘‘দেশকে রক্ষা করার সেই সুযোগ পেলে অবশ্যই যাব। তবে এই সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই করতে হবে। তা হলেই সীমান্তে শান্তি আসবে।’’