বোঝাই: অ্যাম্বুল্যান্সে যাচ্ছে আনাজ। নিজস্ব চিত্র
গত শুক্রবারের পরে আবার মঙ্গলবার। অনির্দিষ্টকালের বন্ধে তীব্র খাদ্য সঙ্কট শুরু হওয়া পাহাড়ে রসদ, আনাজ পৌঁছল ছোট-বড় গাড়িতে। যাত্রী গাড়িতে মালপত্রের সঙ্গে চালকেরা পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে গেলেন আনাজপাতি ও চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ। এ দিন, ইদের জন্য পাহাড়ের সংখ্যালঘুদের পরিবহণে ছাড় দেয় মোর্চা। গত সপ্তাহে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সমতলে নামার জন্য। সে দিনও বাস, ছোটগাড়ির মাথায়, ভিতরে যতটা সম্ভব মালপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পাহাড়ে।
ভোর থেকে চম্পাসারির পাইকারি বাজার, খালপাড়া-নয়াবাজার এলাকায় গাড়ি ঢোকা শুরু হয়। বিক্ষিপ্ত ভাবে পিকআপ ভ্যান, ছোট গাড়ি দোকান, গুদামগুলোতে পৌঁছে মিনিট ১৫/২০ মধ্যে বস্তা তুলে বার হয়ে গিয়েছে। শুধু দার্জিলিং পাহাড়ের জন্য সিকিমের গ্যাংটক, নামচি, মঙ্গনের স্টিকার সাঁটা একাধিক গাড়িকে পাইকারি বাজারে আলু, পেঁয়াজের বস্তা তুলে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দ্রুত গতিতে বার হয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা মন্তব্য করতে চাননি। প্রশ্ন করলে অনেকে শুধু হেসেছেন।
২০১৩ সালের মোর্চার আন্দোলন মাস খানেক যেতেই রসদে টান পড়েছিল। সে বার বন্ধে ছাড় দিয়ে সমতল থেকে খাবার নিয়ে আসতে ট্রাক, গাড়ি নামে। পাইকারি বাজারে তা নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ, ভাঙচুর হয়। দার্জিলিং ও সিকিমের গাড়ি আটকে রাখা হয়। পুলিশ-প্রশাসনকে ময়দানে নেমে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। এ বার সে কথা মাথায় রেখেই ব্যবসায়ীরা অনেকেই মুখ খুলছেন না বলে একান্তে জানিয়েছেন।
এ দিন সমতলে আসা চালকেরা জানিয়েছেন, কেউ ৫ হাজার, কেউ ১০ টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে মালপত্র কেনার অনুরোধ করেছেন। তাই, ইদের ছাড়ের সুযোগে মালপত্রের মাঝে আনাজের বস্তা ঢুকিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। লেবং, বিজনবাড়ির কয়েকজন চালক জানান, দলের নেতাদের কয়েক জনের দেওয়া টাকায় সমতল থেকে বাঁধাকপি, আলু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তা রাস্তায় বিলি করতে করতে যাওয়া হবে বলে কয়েক জন চালক জানান।
ইদের স্টিকার ছাড়াও ঘুম, সোনদা, তাকদা এলাকার বহু গুম্ফার স্টিকার সাঁটা ছোট গাড়িকেও এ দিন বর্ধমান রোড, চম্পাসারি থেকে আনাজ তুলতে দেখা গিয়েছে। এ দিনও সিকিমের বাস পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল। সারা দিনে ২০টির মতো বাস সিকিমে যাতাযাত করেছে। তবে ছোট গাড়ি গত তিন দিনের মতো শালুগাড়া থেকে চলেছে।