শোকার্ত: মেয়েকে হারিয়ে। ইসলামপুরের রামগঞ্জে।
সামনের ফেব্রুয়ারিতেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। রাত জেগে পড়াশোনা চলছিল জোর কদমে। শনিবার বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে পড়লেও রাত জেগে পড়ছিল পিঙ্কি নেশা। তার পরে রাতে কত ক্ষণ ধরে সে পড়াশোনা করেছে, কখন সে ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচাগারে গিয়েছে, জানতেনই না বাড়ির কেউ।
বাবা-মা ও দুই ভাইয়ের ঘুম ভাঙে বাড়ির জ্বালানি রাখার ঘরে আগুন লাগার খবরে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সেই আগুন নেভানোর পর ভস্মীভূত জিনিসপত্রের মধ্যে উদ্ধার হয় পিঙ্কির দেহ। তার আগে প্রতিবেশীরা আগুন নেভানোর সময়েও পিঙ্কিকে ভিড়ের মধ্যে আতঙ্কিত মুখে খুঁজেছেন বাবা-মা। শেষে যখন মেয়ের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হল, সেই দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। অপ্রত্যাশিত ঘটনায় শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন প্রতিবেশীরা।
পিঙ্কি বাড়ির একমাত্র মেয়ে। তার দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। অন্য জন বেসরকারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বাবা পেশায় কৃষক মহম্মদ জমিরুদ্দিন বলেন, ‘‘মেয়ের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল খুব বেশি। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পড়াশোনার দিকে খুব মনোযোগ দিয়েছিল। কী করে এমন ঘটনা ঘটে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ কিন্তু আগুন লাগার পর পিঙ্কির চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি কেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে। যদিও তাদের ঘর থেকে উঠোন পেরিয়ে অনেকটা গিয়ে তবেই জ্বালানি রাখার ঘরের পাশে শৌচাগারে যেতে হয়। ওই দূরত্বের কারণএই কি পিঙ্কির আর্তনাদ কানে যায়নি পরিবারের সদস্যদের? উত্তর দিতে পারছেন না কেউই।
ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’