মেরামত: ভাঙন রোধের কাজ শুরু হল মানিকচকে। নিজস্ব চিত্র
আলোর উৎসবের মধ্যেই আঁধার নেমে এল মালদহের মানিকচকের নদী বাঁধ সংলগ্ন ১২টি বাড়িতে। শুক্রবারের ভাঙনে নদীগর্ভে তলিয়ে যায় তিনটি বাড়ি। আরও ন’টি বাড়ির লোকেদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও শনিবার সকাল থেকে নতুন করে ভাঙন হয়নি মানিকচকের মথুরাপুর পঞ্চায়েতের শঙ্করটোলা গ্রামে। সেই সঙ্গে প্রশাসনের উদ্যোগে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে বাঁধ মেরামতি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। তিনি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে বালির বস্তা ফেলে বাঁধ মেরামত করা হবে। শুখা মরসুমে স্থায়ী ভাবে হবে।” ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম ভাবে সহয়তা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ফুলহারের জলস্তর নামতেই আচমকা ভাঙন শুরু হয়ে যায় শঙ্করটোলায়। নদীগর্ভে তলিয়ে যায় গ্রামের একটি শিব মন্দির। সেই মন্দির তলিয়ে যাওয়ার ভিডিয়োও ভাইরাল হয়ে যায়। তলিয়ে যায় গ্রামের তিনটি বাড়িও। এ ছাড়া নীচ থেকে মাটি আলগা হয়ে যাওয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আরও ন’টি পরিবারকে। ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে বাঁধের উপরে থাকতে শুরু করেছিলেন চিরঞ্জিৎ মণ্ডল, পিন্টু মণ্ডল, বিকাশ মণ্ডলেরা। ফের ফুলহারে তলিয়ে গেল বসতবাড়ি। ফের গৃহহীন হয়ে পড়লেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, “ভিটে, চাষের জমি সবই তলিয়ে গিয়েছিল। নতুন করে বাঁধের ধারে ঘর বেঁধেছিলাম। আলোর উৎসবের মধ্যে ফের ঘরছাড়া হলাম। জানি না ভাঙনের হাত থেকে আর কবে রক্ষা মিলবে।”
চিরঞ্জিতদের মতো ভাঙনের আতঙ্ক গ্রাস করেছে গ্রামের আরও ন’টি পরিবারকে। তাঁদের দাবি, যে কোনও সময় বাড়ি ধসে পড়তে পারে। তাই ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে। যদিও এ দিন নতুন করে ভাঙন না হওয়ায় স্বস্তিতে জেলা প্রশাসন এবং সেচ দফতরের কর্তারা। সেচ দফতরের কর্তাদের দাবি, “জল কমতে শুরু করায় মাটির নীচের অংশ আলগা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে প্রায় ২৫০ জন কর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে। দ্রুত বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চলছে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “সব রকম ভাবে পরিবারগুলিকে সাহায্য করা হবে।”