প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পাহাড়ি এলাকায় লকডাউন অনেকটাই সফল, প্রশ্ন শুধু সমতলের বিভিন্ন এলাকাকে নিয়ে৷ এমনই মনে করছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সরকারি সূত্রের খবর, এই কারণে লকডাউনের প্রশ্নে দার্জিলিং বা কালিম্পঙের পুলিশ সুপারকে না ডেকে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় দল। পাহাড়ের শহর এলাকায় সামান্য ধরপাকড়ের ঘটনা ঘটলেও গ্রামীণ এলাকায় পুরোপুরি ঘরবন্দি পাহাড়বাসী।
কী জাদুতে এই কাজ! পাহাড়বাসীদের একদল বলছেন, ৮০-র দশক থেকে টানা বনধ, ধর্মঘটে অভ্যস্ত পাহাড়। ২০১৭ সালে আলাদা রাজ্যের দাবির আন্দোলনে বিমল গুরুং-এর নেতৃত্বে ১০৪ দিনের পাহাড় বনধ হয়েছে। এছাড়া গত কয়েক দশকে ১২ দিন বা ৭ দিনের টানা বনধ আকছাড় হয়েছে পাহাড়ে। কয়েক ঘণ্টার নোটিশে বদলে গিয়েছে পাহাড়ের ছবি। ফলে বাড়ি থেকে না বেরনোর বিষয়টি পাহাড়বাসীর কাছে একেবারেই নতুন নয়।
কালিম্পঙের বাসিন্দা ও গোর্খা লিগের নেতা প্রতাপ খাতি জানাচ্ছেন, আদতে পাহাড়বাসী আইন মেনে চলার পক্ষে। তাই সরকারি নির্দেশ মানা হচ্ছে ঠিকঠাক। তা ছাড়া বনধ রাজনীতির জেরে পাহাড়বাসীর কাছে ঘরে থাকাটা পুরনো অভ্যাস।
গত মার্চে পাহাড়ে বাইরের পর্যটক ঢোকা বন্ধ করার ঘোষণা করে জিটিএ কর্তৃপক্ষ। তারপরে শুরু হয় দুই পাহাড়ি জেলায় লকডাউন। এরমধ্যে চেন্নাই ফেরৎ কালিম্পঙের মহিলার মৃত্যু হয় এবং তাঁর সংস্পর্শে এসে পরিবারের লোক করোনা আক্রান্ত হন। এরপরেই জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা কালিম্পঙে ঘাঁটি গাড়েন। দার্জিলিঙের দেখভাল শুরু করেন মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং। কালিম্পঙে নতুন করে আক্রান্তের খবর নেই। পুরনো আক্রান্তরাও সুস্থ। দার্জিলিঙে শহরে লকডাউনের নিয়ম ভাঙার কিছু ঘটনা সামনে আসতেই রাস্তায় নামেন বিনয়। নিজে বাজার এলাকা ঘুরে ঘুরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, অকারণে বাড়ি থেকে না বেরনো নিয়ে প্রচার করেছেন। এছাড়া পুলিশের ধরপাকড়ে লকডাউন জোরদার হয়েছে।
গত শনিবার কেন্দ্রীয় দল কালিম্পং সফরে যান। সরকারি সূত্রের খবর, ডম্বর চক থেকে পাহাড়ি জনপদের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লকডাউন নিয়ে প্রতিনিধি দলের মনে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। শুধুমাত্র জেলা পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা তাঁদের সঙ্গে দেখা না করা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন। দাজিলিঙের পাহাড়ি এলাকা নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।