বিপদ: চলছে বালি তোলা।
নিয়ম ভেঙে নদী থেকে বালি, পাথর তোলার জেরে বালাসনের মতো উত্তরবঙ্গের একাধিক নদী বিপন্ন বলে অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের। ওই কারণে সে সব নদীতে থাকা কয়েকটি সেতুও বিপজ্জনক হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই সেতু লাগোয়া নদীখাত থেকে অবাধে বালি, পাথর তোলা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, মাটিগাড়ায় বালাসন সেতু লাগোয়া অংশ, নৌকাঘাট এলাকায় তৃতীয় মহানন্দা সেতু লাগোয়া নদীখাত থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা হয়।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বালাসন, লিস, ঘিস, চেল, ডায়না, জলঢাকা, কালজানি, জয়ন্তীর মতো উত্তরবঙ্গের অনেক নদীতেই এই সমস্যা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোলের অধ্যাপক সুবীর সরকার বলেন, ‘‘সেতুর দু’দিকে ৫০০ মিটার পর্যন্ত বালি, পাথর তোলা বিপজ্জনক। বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে তা ঠিকমতো মানা হচ্ছে না। এখনই সতর্ক না-হলে আগামী দিনে অন্য নদীর সেতুও বিপন্ন হতে পারে।’’ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বালাসন নদী নিয়ে আগে গবেষণা করেছিলেন বর্তমানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাকপা তামাং। তিনি জানান, শিলিগুড়ির বুকে বালাসন জুড়ে যে ভাবে বালি তোলা হচ্ছে তা বিপজ্জনক। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।
মাটিগাড়া ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুবিমল চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘বালাসন নদীখাত থেকে অবৈধ বালি তোলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও তা পুরোপুরি রোখা যায়নি। তবে নজরদারি বাড়ানো হবে।’’
পরীক্ষা: সেতু পরিদর্শনে বিশেষজ্ঞেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিনোদ দাস।
এ দিকে, প্রবল বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে পড়া মাটিগাড়ার বালাসন সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করতেই প্রভাব পড়ল শহরে। বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে নৌকাঘাট, বর্ধমান রোডে যানজট ছিল। সেতু ঠিক না হওয়া পর্যন্ত শিবমন্দির, বাগডোগরা যেতে হলে নৌকাঘাট সেতু পেরোতে হবে। ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে মাটিগাড়া, বাগডোগরা যেতে হবে। তবে দু’চাকার যানের জন্য বালাসন সেতুটি খোলা আছে। পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা জানান, “পর্যটক ও শহরবাসীর কাছে আবেদন, নৌকাঘাট সেতু ব্যবহার করুন। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় মাটিগাড়ার বদলে যে রাস্তা ব্যবহার করতে হবে তা বোর্ড লাগিয়ে জানানো হবে। বিমানবন্দরের রাস্তায় ও পাহাড় থেকে নামার রাস্তাতেও বোর্ড লাগানো হবে।” নিজস্ব চিত্র।