আকাশ পাসোয়ান। নিজস্ব চিত্র।
যেমন পড়াশোনায়, তেমনই খেলাধুলোয়। জলপাইগুড়ির রায়কতপাড়ার শনিমন্দির সংলগ্ন রাস্তার ধারে ঝুপড়ির বাসিন্দা আকাশ পাসোয়ান তেমনই এক অলরাউন্ডার। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিকের কলা বিভাগে আকাশ এ বছর ৪৩৩ নম্বর (৮৬.৬%) পেয়েছে। সে পেয়েছে বাংলায় ৮৬, ইংরেজিতে ৯০, ভূগোলে ৯০, দর্শনে ৯২ এবং সংস্কৃতে ৭৫ নম্বর। আবার এই আকাশই আগামী মাসের ১৪-১৭ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত রাজ্য ব্যাডমিন্টন সিনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে জলপাইগুড়ি জেলার হয়ে খেলায় যোগ দেবেন।
আকাশ, তার ভাই অমল ও স্ত্রী ললিতাকে নিয়ে গৌরীশঙ্কর পাসোয়ানের সংসার। পেশায় দিনমজুর। মাঝে মাঝে রাতেও কোথাও পাহারা দেওয়ার ডাক পড়লে কাজ করেন। আকাশ বলেন, “বাবার একটাই ইচ্ছে। আমরা দুই ভাই ভালো করে পড়াশোনা শিখি। কষ্টের মধ্যেও আমার জন্য কম টাকা দিয়ে গৃহশিক্ষক রেখেছিলেন। আমার ব্যাডমিন্টন খেলার অনুপ্রেরণা আমার মা।” এখন আকাশের জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজ থেকে ভূগোলে স্নাতক হওয়ার ইচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাডমিন্টন খেলাও সে চালিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার দুপুরে আকাশদের বাড়িতে তার বাবা মা কেউই ছিলেন না। ব্যাডমিন্টমন একেবারেই উচ্চবিত্তের খেলা। সেই খেলায় তিনি এলেন কী করে? আকাশ বলেন, “কেন জানি না আমার মায়ের ব্যাডমিন্টন খেলা ভালো লাগত। ছোটবেলায় মা আমাদের দুই ভাইকে নিয়ে জলপাইগুড়ি ইনডোর গেমস প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের হলে খেলা দেখাতে নিয়ে যেতেন। মায়ের অনুরোধেই আমাদের ভর্তি করে নেওয়া হয়। তখন থেকে ব্যাডমিন্টন খেলি।”
জলপাইগুড়ি ইনডোর গেমস প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের হলে ছোট থেকেই তিনি নিখরচায় ব্যাডমিন্টন খেলছেন। একটু বড় হয়ে অনূর্ধ্ব ১৪ বয়সের খেলোয়াড়দের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলা চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। অনূর্ধ্ব ১৯ বছর খেলোয়াড়দের নিয়ে জাতীয় প্রতিযোগিতায় তিনি পুনায় যোগ দিয়েছেন। উচ্চমাধ্যমিকে টেস্ট পরীক্ষার আগে পর্যন্ত আকাশ সন্ধ্যায় নিয়মিত অনুশীলন করেছেন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর আবার অনুশীলন শুরু করেছেন। এখন রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন করছেন।