বক্তা: বালুরঘাটের সভায় কৈলাস বিজয়বর্গীয়। নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় দেড় জন লোকের সরকার চলছে বলে রবিবার বালুরঘাটে মন্তব্য করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এ রাজ্যে সিন্ডিকেট রাজ ও কাটমানির সরকার চলছে অভিযোগ তুলে কৈলাস বলেন, ‘‘অহঙ্কারী বাংলার এই সরকারে কোনও গণতন্ত্র চলে না। কিন্তু রাবণের অহঙ্কারও বেশি দিন চলেনি। আর দিদিরও চলবে না।’’
এ দিন বালুরঘাট ও বুনিয়াদপুরে সভা করেন বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতা। দুই সভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করে কৈলাস বলেন, ‘‘এখানে ভাইপো কয়লা পাচার করছেন। গরু পাচার করছেন। সিন্ডিকেট রাজ চালাচ্ছেন। মা-মাটি-মানুষের নামে ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরে বাংলার মায়েদের কোল খালি করছেন। ১৩৫ জন বিজেপি কর্মীর মায়েরা সন্তান হারিয়ে কাঁদছেন। এর জবাব দিদিকে দিতে হবে।’’ কৈলাসের হুঁশিয়ারি, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এসে বাংলায় হিংসার রাজনীতি বন্ধ করবে। তোলাবাজ, গুন্ডাদের জেলে ভরে দেওয়া হবে।’’
পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, ‘‘গরু পাচার নিয়ে কৈলাসবাবুরা ভাল বলতে পারবেন। কারণ সীমান্তের দায়িত্বে আছে কেন্দ্রের বিএসএফ। সুকান্তবাবুরা, কৈলাসবাবু তাই জানেন তাঁরা গরু পাচার করে কতটা লাভবান হচ্ছেন। ওঁরাই তো ঠিক করেন গরু পাচার করে কতটা তোলা তুলতে হয়। কাঁচের ঘরে থেকে ঢিল ছোড়া উচিত নয়। আর ওরা ক্ষমতায় এসে কী ভাবে মানুষের উপরে নির্যাতন করছে সেটা পাশের রাজ্য অসম, ত্রিপুরার দিকে তাকালেই দেখা যায়। মানুষকে বিভ্রান্ত করে আর লাভ নেই। মানুষ ওদের বিশ্বাস করে না।’’
কৈলাসের দাবি, আসন্ন বিধানসভা ভোটে ৫১ শতাংশ জনমত নিয়ে বিজেপি বাংলার সরকার গড়বে। ক্ষমতায় এসেই কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পে বাংলার প্রতি চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বকেয়া ১৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে। কৈলাসের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের ৯ বছরে রাজ্যে সমস্ত উদ্যোগ বন্ধ হয়েছে। এখানে হাতিয়ার ও বোমার শিল্প চলছে। একসময় কলকারখানা ও শিল্পে ভারতের ২৫ শতাংশ অংশীদারি ছিল পশ্চিমবঙ্গের। বাম ও পরে তৃণমূলের শাসনে তা এখন ২ শতাংশে নেমে গিয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর সুভাষ চাকির পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিধানসভা ভোটে জিততে কৈলাসের মত বিজেপি নেতারা ওই সব কথা বলে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। কিন্তু তাঁদের আশা পূরণ হবে না।’’ এ দিনের বৈঠকে গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলাপরিষদ মিলিয়ে জেলার ২২৩ জন বিজেপির প্রধান, সভাপতি-সহ জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অধিকাংশই মহিলা। সবাই রোজ একঘণ্টা করে সাংগঠনিক কাজে ঝাঁপাবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।