অসুস্থ শরীর, দোসর টাকা চুরির আতঙ্ক

মালদহ মেডিক্যাল কলেজের মূল গেটের কাছেই রয়েছে বহির্বিভাগের আটতলা বাড়ি। সেই বাড়ির একতলায় টিকিট কাউন্টার ও ওষুধের দোকান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৪৮
Share:

পোস্টার: জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

Advertisement

টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু হয়েছে লাইন। গিয়ে ঠেকেছে জরুরি বিভাগে। রোগীদের ভিড়ে থিকথিক করছে বহির্বিভাগ। সেই ভিড়ের সুযোগ নিয়ে সক্রিয় দুষ্কৃতী চক্র। রোগী বা রোগীর আত্মীয় সেজে ভিড়ে মিশে যাচ্ছে তারা। আর বাড়ছে চুরি আর কেপমারির ঘটনা। একে জ্বর নিয়ে উদ্বেগ। দোসর হয়েছে চুরির আতঙ্ক।

Advertisement

মালদহ মেডিক্যালের বহির্বিভাগে ভিড়ের সুযোগে চুরি, ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সুপার অমিতকুমার দাঁ বলেন, “বহির্বিভাগের ভিড় নিয়ে উদ্বেগে রয়েছি। বিভিন্ন এলাকায় সিসিটিভি বসানো হয়েছে। তবুও বিক্ষিপ্তভাবে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।” নিরাপত্তার বিষয়টি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মালদহ মেডিক্যাল কলেজের মূল গেটের কাছেই রয়েছে বহির্বিভাগের আটতলা বাড়ি। সেই বাড়ির একতলায় টিকিট কাউন্টার ও ওষুধের দোকান। আর অন্যান্য তলায় রয়েছে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা বিভাগ। জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মেডিক্যালের বহির্বিভাগে প্রায় সাড়ে চার হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। আর শুক্র ও শনিবার গড়ে দু’হাজার করে রোগীর ভিড় হয়। সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রোগীর ভিড়ে থিকথিক করে বহির্বিভাগ। আর সেই ভিড়কে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চুরি, ছিনতাই এর চক্র।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চক্রে বেশিরভাগ সময় মহিলা ও কিশোরদের কাজে লাগানো হচ্ছে। তারা ভিড়ের মধ্যে অন্যান্য রোগীদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। তারপরই কখনও চুরি, কখনও কেপমারি করে চম্পদ দিচ্ছে। বিগত কয়েক মাসে একাধিকবার চিকিৎসা করাতে এই হাসপাতালে এসে সর্বস্ব খুইয়েছেন রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। এমনকী, বহির্বিভাগে শিশু চুরির অভিযোগও উঠেছে। গত, মাসে চর্ম রোগের সমস্যা নিয়ে ঝাড়খন্ডের পাকুর থেকে চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে এসেছিলেন সুফিয়াবিবি। দেড়মাসের ছেলেকে দিদির কাছে দিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকেছিলেন তিনি। তাঁর দিদির সঙ্গে ভাব জমিয়ে শিশুটিকে আদর করার নাম করে কোলে নেয় অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলা। তারপরেই ওই মহিলা শিশুটিকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এখনও সেই শিশুর খোঁজ মেলেনি। কালিয়াচকের বাসিন্দা সামিয়ারা বেগম, জাহারা বিবি বলেন, “হাসপাতালে আসতে ভয় করে এখন। প্রায় শুনছি আউটডোরে চুরি, পকেটমারি হচ্ছে। এমনকী, বাচ্চাও চুরি হয়েছে।”

মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহির্বিভাগের বিভিন্ন প্রান্তে সিসিটিভি বসানো হয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের ভিড় সামলানোর জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারও রাখা হয়েছে। তবে এক সিভিক ভলান্টিয়ার বললেন, “আমরা মুলত লাইন এবং বিশৃঙ্খলা হলে তা সামলাই। এই ভিড়ে কে চোর তা কী করবে বুঝব।” জেলাশাসক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement