হিলিতে খুন শাশুড়ি-বৌমা, টাকা-গয়না লুঠ

থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বাড়িতে ঢুকে এক বৃদ্ধা ও তাঁর বৌমাকে খুন করে কয়েক হাজার টাকা ও সোনার গয়না লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার কাছে বৈকুণ্ঠপুর এলাকায় ওই বৃদ্ধার বৌমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিলি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
Share:

থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বাড়িতে ঢুকে এক বৃদ্ধা ও তাঁর বৌমাকে খুন করে কয়েক হাজার টাকা ও সোনার গয়না লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার কাছে বৈকুণ্ঠপুর এলাকায় ওই বৃদ্ধার বৌমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

Advertisement

মধ্য ত্রিশের ওই মহিলার পাশের ঘরেই ঘুমিয়েছিল তাঁর কিশোর পুত্র। পুলিশের দাবি, সে অবশ্য রাতে কিছুই বুঝতে পারেনি বলে জানিয়েছে। তার ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকল তুলে বন্ধ করে দেওয়া ছিল। তার ঠাকুমার দেহ পড়েছিল উঠোনে জলের কলের পাশে। তাঁকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃৃদ্ধার স্বামী মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। তাঁর ছেলে বছর পাঁচেক আগে আত্মহত্যা করেন। তার পর থেকে ওই বৃদ্ধা তাঁর বৌমা ও নাতিকে নিয়ে থাকতেন। বৌমা থানার পাশে চা ও মুদির দোকান চালাতেন। তাঁকে সাহায্য করত ছেলে। সেই আয় থেকেই সংসার চলত। তিন জনে তিনটি আলাদা ঘরে থাকতেন। ঝোপঝাড়ে ভরা টিনের ছাউনি ও পাকা দেওয়ালের পাশাপাশি দু’টি ঘরে থাকতেন বৃদ্ধার বৌমা ও নাতি। দু’জনের ঘরের মাঝখানে একটি দরজা রয়েছে। তবে তা ওই মহিলার ঘরের দিক থেকে বন্ধ করা থাকত।

মহিলার ঘরের মূল দরজাও এ দিন বন্ধ ছিল। তবে তাঁর ঘরের জানলাটির গরাদ নেই। তাই সেখান দিয়ে দুষ্কৃতীরা অনায়াসেই তাঁর ঘরে ঢুকতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে।

Advertisement

এ দিন সকালে ওই জানলা দিয়েই প্রতিবেশীরা দেখেন, চৌকিতে বিবস্ত্র অবস্থায় ওই মহিলার দেহ পড়ে রয়েছে। পাশেই পড়েছিল নলকূপের ভাঙা হাতল। পুলিশের অনুমান, ওই হাতল দিয়ে আঘাত করেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। মহিলার ঘরের আলমারিটি ভাঙা ছিল।

তাঁর শাশুড়ি থাকতেন উঠোনের অন্য দিকের একটি ঘরে। দুষ্কৃতীরা সে ঘরেও ঢোকে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানেও আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ও গয়না লুঠ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে বৃদ্ধার ঘরের দরজা ভাঙা হয়নি। পুলিশের অনুমান, বৃদ্ধা রাতে শৌচাগারে যাওয়ার সময় তাঁর খোলা দরজা দিয়ে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। পরে তাঁকে খুন করা হয়।

এ দিন সকালে ডিএসপি-কে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় যান দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া। ঘটনাটির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “খুনের কারণ জানতে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃদ্ধার বৌমার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এদিন বিকেলে স্থানীয় এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”

আততায়ীরা স্থানীয় দুষ্কৃতী বলেই মনে করছেন এলাকার আরএসপি-র গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য বিদ্যুৎ হালদার। তাঁর বক্তব্য, অত্যাচারের পরে ওই মহিলাকে দুষ্কৃতীরা খুন করার সময়ে ওই বৃদ্ধা ঘুম থেকে উঠে এসেছিলেন ও পুরো ঘটনা দেখে ফেলেছিলেন, এমনটাও হতে পারে। সে জন্যই তাঁকে খুন করাও হতে পারে।

পুলিশও এই সন্দেহ উড়িয়ে দিচ্ছে না। এলাকার বাসিন্দারাও এই ঘটনায় হতবাক। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ওই পরিবারের আত্মীয়স্বজনেরা কাছাকাছিই থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই পরিবারের সঙ্গে কারও কোনও বিবাদ ছিল না। পরিবারটি দরিদ্রও। এমন ঘটনা কী করে ঘটল, তা তাঁরা ভেবে পাচ্ছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement