বেশি ফলনে মালদহে আশঙ্কা লিচু চাষিদের

ফলন কম হোক বা বেশি, দু’য়েই সমস্যায় পড়ছেন লিচু চাষিরা। গত বছর উৎপাদন কম হওয়ার জন্য লিচু চাষে লোকসানের মুখ দেখেছিল মালদহ। আবার এ বছর লিচুর রেকর্ড ফলনের সম্ভাবনায় দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন সেখানকার চাষিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:১৩
Share:

ইতিমধ্যেই গাছ ভরে গিয়েছে মুকুলে।—নিজস্ব চিত্র

ফলন কম হোক বা বেশি, দু’য়েই সমস্যায় পড়ছেন লিচু চাষিরা। গত বছর উৎপাদন কম হওয়ার জন্য লিচু চাষে লোকসানের মুখ দেখেছিল মালদহ। আবার এ বছর লিচুর রেকর্ড ফলনের সম্ভাবনায় দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন সেখানকার চাষিরা। তা ছাড়াও গত বছর ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি একাধিক বার ঝড় বৃষ্টিতেও ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের।

Advertisement

জেলা উদ্যান পালন দফতরের সহ-অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানান, আমের মতোই লিচুও এক বছর ভাল উৎপাদন হয়, পরের বছর উৎপাদন কম হয়। এ বার আবহাওয়ার কারণে ব্যাপক পরিমাণে মুকুল আসায় গত বারের তুলনায় অন্তত তিন গুণ বেশি ফলন হওয়ার আশা করেছেন তিনি। তবে এখনই দাম না পাওয়ার আশঙ্কারও জায়গা নেই বলে জানান তিনি।

উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহে ১২০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়। তার মধ্যে ৭০ শতাংশ হয় কালিয়াচক ১ ব্লকের কালিয়াচক, মোজমপুর, সুজাপুর, আলিনগর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। ২০১৪ সালে জেলায় লিচু হয়েছিল ১৫ হাজার মেট্রিক টন, কিন্তু ২০১৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র চার হাজার মেট্রিক টনে। গত মরসুমে ঝড়-বৃষ্টির কারণে প্রায় দেড় হাজার মেট্রিক টন লিচুর ক্ষতি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ফলে সব মিলিয়ে বিশাল অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল লিচু চাষিদের।

Advertisement

এই মরসুমে জেলায় গাছগুলিতে ৮০ শতাংশ মুকুল এসেছে যা সর্বকালের রেকর্ড বলে জানা গিয়েছে। এ বছর ক্ষতি আটকানোর জন্য উদ্যান পালন দফতরের তরফে চাষিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় দুই ধরনের লিচু চাষ হয়। একটি হল গুটি লিচু এবং অপরটি বোম্বে লিচু। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে দেখা যায় গুটি লিচু। আর বোম্বে লিচুর জন্য জেলাবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। লিচুর গায়ে রং ধরা অবস্থায় বৃষ্টি হলে ফলে ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এর ফলে লিচু নষ্ট হয়য়। এর জন্য চাষিদের আগে থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, পোকা রুখতে প্রতি লিটার জলে এক মিলি লিটার ডাইক্লোরোভাস মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

কিন্তু এত আশ্বাস সত্ত্বেও চিন্তা কমছে না সফিকুল মিঞা, রফিক শেখদের। তাঁরা বলেন, ‘‘গাছ থেকে লিচু পেড়ে নেওয়ার পর দু’দিন রাখতেই সমস্যায় পড়তে হয়। তাই সময় মতো বিগত মরসুমে ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছিল।’’ এ বার গাছে যত মুকুল এসেছে তা দেখে গত বারের দাম পাওয়াটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement