সঙ্গীতা কুণ্ডু অপহরণ মামলায় এ দিন যে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দিয়েছিল সিআইডি, তা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে জমা দিতে নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। একই সঙ্গে তিনি মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করারও আদেশ দিলেন। আদালত সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হবে।
গত ১৭ অগস্ট থেকে সঙ্গীতা নিখোঁজ। শিলিগুড়ির যে জিম-পার্লারে তিনি কাজ করতেন, তার মালিক পরিমল সরকার এর ন’দিন পর নিখোঁজ ডায়েরি করেন ভক্তিনগর থানায়। তার পর থেকে সঙ্গীতার কোনও খোঁজ নেই। সঙ্গীতার অপহরণ নিয়ে ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁর দাদা শম্ভু কুণ্ডুকে পুলিশ প্রথমে ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে ‘পরিমল ভাল ছেলে’ বলেও থানার অফিসার উল্লেখ করেছিলেন বলে অভিযোগ শম্ভুবাবুর। পরে নানা মহলের চাপে তারা অভিযোগ নেয়। এই তদন্তের দায়িত্ব এখন সিআইডি-র হাতে। কিন্তু তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ এনে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার দেওয়ার আর্জি নিয়ে এর মধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শম্ভু।
এই মামলায় তদন্ত কত দূর এগিয়েছে, তা নিয়ে এ দিন ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দেওয়ার কথা ছিল সিআইডি-র (সোমবার প্রকাশিত ‘সঙ্গীতা কোথায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনের শিরোনামে ভুলবশত লেখা হয়, ‘তদন্ত নিয়ে সিবিআই রিপোর্ট দেবে কোর্টে’। আসলে ওই রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল সিআইডি-র। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী)। শম্ভুবাবুর দুই আইনজীবী শিলিগুড়ির অর্ণব সেনগুপ্ত ও কলকাতার বৈদুর্য্য ঘোষাল একযোগে জানান, এ দিন সিআইডি সিল বন্ধ খামে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দেয় হাইকোর্টের কাছে। বিচারপতি সেটি গ্রহণ না করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে তা যথাস্থানে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
কী সেই পদ্ধতি? শম্ভুবাবুর আইনজীবীদের দাবি, যে হেতু তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, তাই সিআইডিকে হাইকোর্টের পাশাপাশি ‘স্টেটাস রিপোর্ট’-এর একাধিক প্রতিলিপি তৈরি করতে হবে। কারণ, মামলায় যুক্ত সব পক্ষই সেই প্রতিলিপি চাইতে পারে। সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই সিআইডিকে সিঙ্গল বেঞ্চে রিপোর্ট দাখিল করতে হবে বলে অর্ণববাবুর অভিমত। অর্ণববাবু জানান, মামলাটির যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সে জন্য ৩-৪ দিনের মধ্যে সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি প্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়েছে। সিআইডি সূত্রের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতো বিধি মেনে যথাযথ জায়গায় রিপোর্ট পাঠানো হবে।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই জলপাইগুড়িতে সঙ্গীতা অপহরণ-মামলায় ধৃত পরিমল-সহ অন্য ধৃতদের হাজির করানো হলে তাঁদের জামিনের আর্জি ফের নাকচ করে দেন জলপাইগুড়ির মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক। ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার পরে ফের তাঁদের ওই আদালতে তোলা হবে।