সীতাকে হরণ করে নিয়ে যাচ্ছে রাবণ। রুখে দাঁড়ালেও রাবণের সঙ্গে পেরে ওঠে না জটায়ু। প্রাণ দিতে হয়েছিল তাকে। কিন্তু সাময়িক ভাবে আসুরিক শক্তির জয় হলেও রাবণের শেষ পরিণতির কথা সবার জানা।
সেই কাহিনিই এ বারের পুজোয় আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হবে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দক্ষিণী যুগদর্শীর পুজোয়। পাশাপাশি এ বার তাদের পুজোর থিম, দেবী আসছেন রথে। তাই ওই থিমকেই বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
৪৬ ফুট চওড়া ও ৫০ ফুট উঁচু লোটাস মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপে ঢুকলেই মনে হবে স্বর্গ থেকে নেমে আসছে রথ। রথে একচালায় একই সঙ্গে দেবী দুর্গা সহ সমস্ত দেবদেবী।
হরিশ্চন্দ্রপুরে প্রতি বছরই সব থেকে বড় বাজেটের পুজো করে ওই ক্লাব। এ বার ২৯ তম বছরেও দেবী প্রতিমা, মণ্ডপ থেকে শুরু করে আলোকসজ্জা, চমক থাকছে সবেতেই। তবে শুধু জাঁকজমক নয়। পুজোর কয়েক দিন তো বটেই, তারও ১০ দিন আগে থেকে সমাজ সচেতনতামূলক নানা প্রচারও চালানো হয় ক্লাবের তরফে। এ বার এ জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রাখা হচ্ছে ২৫টি মাইক। তাতে হেলমেট পরে বাইক চালানোর পাশাপাশি ‘গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান’ বা ‘রক্ত দান করুন, জীবন বাঁচান’, চলবে এমনই প্রচার।
ওই পুজোকে ঘিরে সপ্তমীর দিন থেকেই মেলা বসে। নবমীর দিন নরনারায়ণ সেবাও করা হয়। গত বছর আট হাজার মানুষকে খাওয়ানো হয়েছিল। এ বার লক্ষ ১০ হাজার। এ ছাড়া, খরচ বাঁচিয়ে দুঃস্থদের বস্ত্রও বিলি করা হয়।
সম্প্রতি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নিহত হয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল দাস। তিনি ক্লাবের সদস্য না হলেও শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। গায়ক তথা তৃণমূল নেতা সৌমিত্র রায়ের বন্ধু উজ্জ্বলবাবুর প্রচেষ্টাতেই ওই ক্লাব দু’লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছিল। তাই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এ বার মণ্ডপের সামনে রাখা হবে উজ্জ্বলবাবুর ছবি। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মণ্ডপের বাইরে থাকবে পোস্টারও।
ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মানিক দাস বলেন, ‘‘উজ্জ্বলবাবুর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আসুরিক শক্তির কাছে তাকে হার মানতে হয়েছে। কিন্তু আসুরিক শক্তি বিনাশ যে অবশ্যম্ভাবী, সেটাই আমরা আলোকসজ্জায় তুলে ধরতে চাইছি।’’