শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। নিজস্ব চিত্র
শিলিগুড়িতে জি ২০ সামিট আগামী ১ থেকে ৩ এপ্রিল। বিভিন্ন দেশের অতিথিরা আসছেন। এই সামিট উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বড় সম্ভাবনা তৈরি করবে বলে মনে করছে প্রশাসন। প্রায় ১৫০ জনের মতো অতিথি আসছেন বাইরে থেকে। তাঁরা তিন দিন থাকবেন। সেই সময় উত্তরবঙ্গের নানা সম্ভাবনা তুলে ধরতে তৎপর রাজ্য। বুধবার শিলিগুড়িতে মাল্লাগুড়ির একটি হোটেলে ‘মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রেনারশিপ’ (এমএসএমই) কনক্লেভে এ কথা জানান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ দিন সচিবেরা উত্তরবঙ্গের বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। মুখ্যসচিব ছাড়াও রাজ্যের শিল্প দফতরের বিশেষ সচিব, এমএসএমই-র প্রধান সচিব, ভূমিসংস্কার কমিশনার, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সচিবেরা ছিলেন।
মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আগামী ১ থেকে ৩ এপ্রিল জি ২০ সামিট হচ্ছে শিলিগুড়িতে। বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা আসছেন। এটা বড় সম্ভাবনা তৈরি করবে। আমরা উত্তরবঙ্গের সম্ভাবনা ‘শো-কেস’ করতে পারি।’’ আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গে ১১০২৬ কোটি টাকার বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। তিনি জানান, বিনিয়োগগুলো নিয়ে ‘এগ্রি-ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড’ করা হয়েছে। তাতে সাড়া মিলছে উত্তরবঙ্গে। কৃষি এবং কৃষি সম্পর্কিত শিল্পে দু’হাজার কোটিরও বেশি টাকার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য। ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর পলিসিতে শিলিগুড়ির বিষয়টিও রয়েছে। ওই করিডর প্রকল্পে জাতীয় সড়কের আশেপাশে শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়নের ভাবনা রয়েছে। চাষ বেশি হয় না এমন জমির চরিত্র বদলে তাকরা হবে।
এ দিন উত্তর দিনাজপুর থেকে ইথানল তৈরির ১৭৫ কোটি টাকার ইউনিট তৈরির উদ্যোগপতিও উপস্থিত ছিলেন। জানানো হয়, গ্লাস কারখানা, জুট প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট উত্তর দিনাজপুরে আসছে। বেশ কিছু হিমঘর হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। বিনিয়োগকারীরা কিছু সমস্যার কথাও বলেছেন। যেমন, দমকলের ছাড়পত্র পেতে এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ভবন তৈরির অনুমতি পেতে সময় লাগা। বিদ্যুৎ বিল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে কারও কারও।
এ ছাড়া, বাঁশ থেকে সামগ্রী তৈরির শিল্পও আসছে উত্তরে। তাই বাঁশ থেকে তৈরি সামগ্রী ও হস্তশিল্পের জন্য সুস্পষ্ট নীতির আবেদন করা হয়েছে। মুখ্যসচিব জোর দেন উত্তরের পর্যটন শিল্পে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সব সময় বলেন, উত্তরবঙ্গে, পাহাড়ে শান্তি থাকলে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়বে।’’
রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি ব্লকে ইন্ডস্ট্রিয়াল পার্কের পরিকাঠামো তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘টেক্সটাইল পলিসি’, ‘পাওয়ার লুম পলিসি’, ‘লজিস্টিক পলিসি’, ‘ইনসেনটিভ স্কিম’ রয়েছে। পর্যটন এবং চা পর্যটনে চা বাগানে ১৫ শতাংশ জায়গা ব্যবহারের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, বারৌণি থেকে গুয়াহাটি গ্যাস পাইপলাইন হচ্ছে সিটি গ্যাসের এবং সিএনজি সাব স্টেশন হবে। আগামী কয়েক বছরে এমএসএমই-তে ৩৫০৬ কোটি টাকা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩৫২৬ কোটি এবং পর্যটন ও চা পর্যটনে ৯৫০ কোটি বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথাজানানো হয়েছে।