ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে গাছে বহিরাগত এক ব্যক্তির ঝুলন্ত পচাগলা দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি গাছে ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ওই অংশে সীমানা পাঁচিল নেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুচিত্র সরকার (৫০)। বাড়ি রাঙাপানি এলাকায়। কয়েক দিন ধরেই নিখোঁজ ছিলেন ওই মাছ ব্যবসায়ী। কিন্তু ক্যাম্পাসের মধ্যে তাঁর দেহ উদ্ধার হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডের ভূমিকা নিয়েও পড়ুয়া, শিক্ষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এশিয়ান হাইওয়ে তৈরির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশে রাস্তা বরাবর সীমানা পাঁচিল ভাঙা পড়ে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরেও তাঁরা সীমানা পাঁচিল তৈরি করে দেননি। তাতে সমস্যা বেড়েছে।’’ কর্তৃপক্ষের দাবি, বহিরাগতরা পাঁচিল ভেঙে থাকা ক্যাম্পাসের একটা বড় অংশ দিয়ে অবাধে ঢুকছে। ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডের’ দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সজল চক্রবর্তীর কথায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশে সীমানা পাঁচিলের ভাঙা অংশ দিয়ে ভিতরে ঢুকে জঙ্গলের মধ্যে শৌচকার্য করে ট্রাকচালক, খালাসিরা। এমনকি, অন্য বহিরাগতদের একাংশও। এ দিন এলাকার এক দুধওয়ালা পাঁচিলের ভাঙা অংশ দিয়ে ক্যাম্পাসের সে দিকে থাকা জঙ্গলে শৌচকার্য করতে গিয়ে ঝুলন্ত দেহটি দেখতে পান বলে দাবি। তিনি ২ নম্বর গেটে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের খবর দিলে জানাজানি হয়।
শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে খুন করা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে কেউ অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করলে তা খুবই বিপজ্জনক ব্যাপার। তাঁদের দাবি, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা যে সুরক্ষিত নয়, এই ঘটনায় সেটা স্পষ্ট। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারির ব্যবস্থাও নেই এ সব জায়গায়। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও তাই অনেকে সমালোচনা করেছেন। অনেকের অভিযোগ, পিছনের অংশেও অনেক জায়গায় সীমানা পাঁচিল ভেঙে রয়েছে। বাইরের ট্রাক ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়েও চলাচল করে।
এ দিন ঘটনাস্থলে যান মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ। কী ভাবে এক ব্যক্তির দেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঝুলছে এবং কেন বিষয়টি নিরাপত্তারক্ষীদের নজরে এল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। দিলীপ মল্লিক নামে এক ব্যক্তির কথায়, “যে অবস্থায় দেহটি ছিল, তা দেখে মনে হচ্ছে কেউ মেরে ব্যক্তিকে ঝুলিয়ে দিয়েছে। সেখানে গ্লাস, ওষুধও পড়ে ছিল।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কর্মী ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘বিষয়টি উদ্বেগজনক। নিরাপত্তার দিকটি অবহেলিত হয়ে পড়েছে। পড়ুয়া, শিক্ষক, কর্মীদের জন্য এই ঘটনা বিপদের ইঙ্গিত।’’