হামরো পার্টির অন্যতম প্রধান অজয় এডওয়ার্ড। ফাইল চিত্র।
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আজ, শনিবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে দু’দিনের সেমিনার। এর অন্যতম উদ্যোক্তা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তথা বিমল গুরুং। ওই সেমিনারে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন হামরো পার্টির অন্যতম প্রধান অজয় এডওয়ার্ড। তাতেই জল্পনা শুরু হয়েছে— পাহাড়ের রাজনীতিতে কি এ বার নতুন সমীকরণ হতে চলেছে?
দার্জিলিং পুরসভার ৩২টি আসনের ১৮টিতে জিতে ক্ষমতায় আসে অজয়ের হামরো পার্টি। অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ন’টি, তৃণমূল দু’টি এবং বিমল গুরুংয়ের জনমুক্তি মোর্চা তিনটি আসন পায়। সম্প্রতি হামরো পার্টির ছ’জন কাউন্সিলর প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়েছেন।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার এক কাউন্সিলর ইস্তফা দিয়ে জিটিএ ভোটে লড়েন। এর ফলে, বর্তমানে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার ১৪ জন কাউন্সিলর। তৃণমূল মোর্চার সঙ্গেই রয়েছে। কাজেই মোর্চার দাবি, তারা পুরসভা দখলের অপেক্ষায়। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের ডাকা কনভেনশনে অজয় এডওয়ার্ডে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায় জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার অজয় বলেন, ‘‘কনভেনশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যোগ দেব। গোর্খাল্যান্ডের দাবির সঙ্গে পাহাড়ের আবেগ জড়িয়ে। আমরাও একই কথা বলে আসছি। তবে পাহাড়ে নতুন করে কোনও অস্থিরতা বা হিংসা আমরা চাই না।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিষয়টি এখনই খুব বেশি না ভাবলেও তা নিয়ে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে আলোচনা হবে বলেই অজয় জানিয়েছেন। তাঁদের কাউন্সিলর ‘ভাঙিয়ে’ অনীত থাপা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় শামিল করে পুরসভা দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগও তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের প্রবণতা ঠিক নয়। এতে পাহাড়ে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। মানুষ যে রায় দিয়েছেন, তা মেনে নেওয়া উচিত।’’ বস্তুত, অনীতকে ঠেকাতেই বিমল-অজয় কাছাকাছি আসতে চলেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ। তা ছাড়া, পুরসভা ধরে রাখতে মোর্চার তিন কাউন্সিলরের সমর্থনও তাঁদের প্রয়োজন।
মোর্চার অন্যতম নেতা রোশন গিরি জানিয়েছেন, আরও অনেককেই তাঁরা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং অনেকেরই সেমিনারে আসার কথা রয়েছে। জিটিএ-র চিফ এগ্জ়িকিউটিভ তথা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা বলেন, ‘‘ওঁদের কনভেনশন নিয়ে বলার কিছু নেই। তবে এটা অর্থহীন। আন্দোলন করে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখেই জিটিএ গঠন হয়েছে। আমরা জিটিএ-র মাধ্যমে সে প্রস্তাবই নিয়েছি। আলাদা করে কনভেনশন করার অর্থ শূন্য থেকে ফের শুরু করা।’’ প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার বিরুদ্ধে বিরোধীরা কি কার্যত একজোট হচ্ছেন? এ প্রশ্নে অনীতের বক্তব্য, ‘‘শুনছি, বিনয় তামাংও কনভেনশনে যোগ দিতে রওনা হয়েছেন। আমার বিরোধিতা করে লাভ কী? মানুষ ওঁদের ওই নাটকের সঙ্গে নেই।’’