অজয় এডওযার্ড (বাঁ দিকে), রাহুল গান্ধী (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের লোকসভার ইস্তাহার কমিটিতে গোর্খাদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য রাহুল গান্ধীকে চিঠি দিলেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। গত রবিবার জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি হয়ে রাহুল উত্তর দিনাজপুরে যান। তার আগে ওই দিন জলপাইগুড়িতে রাহুলের সঙ্গে অজয় দেখা করে তাঁর হাতে চিঠিটি তুলে দেন। রাহুলকে দলের ইস্তাহার কমিটির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমের সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
অজয় সোমবার বলেন, ‘‘ভারতীয় সংবিধানের আওতায় গোর্খাদের ন্যায়বিচারের জন্য আলোচনা করতেই সময় চাওয়া হয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বাস দিয়ে প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। এতে গোর্খা সম্প্রদায় নিজের উপেক্ষিত মনে করছে।’’ তিনি জানান, ইস্তাহার কমিটিকে বিষয়গুলি জানিয়ে একাধিক প্রস্তাব দিতে চাই। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপি-বিরোধী আওয়াজ তুলে মণিপুর থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় যোগ দেওয়ার পর থেকে অজয় কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। গোর্খাদের বিজেপি তিনটি লোকসভা ভোটে প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন করেনি বলে অজয়েরা আওয়াজ তুলেছেন। অজয়ের পুরনো দল জিএনএলএফ বিজেপি শিবিরেই। তাই অজয় বিজেপি-বিরোধী শিবিরে থাকতে চাইছেন। এতে পাহাড়ের রাজনীতিতে তিনি দিল্লি সংযোগ রেখে চলতে পারবেন। তেমনই, বিজেপি-জিএনএলএফ জোটের মতো পাল্টা তিনি কংগ্রেসের পাশে থেকে ইস্তাহারে পাহাড়ের দাবি-সহ বিভিন্ন বিষয় তুলতে চাইছেন।
অজয় জানান, পাহাড়বাসীকে কিছু বিষয় ভুললে চলবে না। নেপালি ভাষার স্বীকৃতি, পার্বত্য পরিষদ থেকে জিটিএ তৈরি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারে আমলেই হয়েছিল। রবিবার বিকেলে রাহুলের সঙ্গে অজয় জলপাইগুড়িতে দেখাও করেন। তিনি তাঁর হাতে দাবিপত্র, খুকরি এবং গোর্খা টুপি তুলে দিয়েছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অধিবেশন চলবে। সেখানে গোর্খাদের দাবিদাওয়া, সংবিধানিক স্বীকৃতি বা ১১ জনজাতির তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি নিয়ে কিছু হবে কি না, সে দিকে পাহাড় তাকিয়ে আছে। হামরো পার্টির সভাপতিও দিল্লির দিতে তাকিয়ে আছেন। দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপি সরকার কোনও কিছু ঘোষণা করলে পরিস্থিতি এক রকম হতে পারে। আর ভোটের আগে ঘোষণা না হলে পাহাড়ে বিজেপি-বিরোধী সুর চড়াবেন অজয়েরা। সেখানে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিনয় তামাংদের তিনি পাশে পাবেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বধীন বা তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে অজয়দের বোঝাপড়ার বিষয়টি বাজেট অধিবেশনের পরে আরও স্পষ্ট হবে।