ভোটপর্ব মিটতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠলো মালদহের কালিয়াচকের নওদা-যদুপুর। শুক্রবার রাতে নওদা-যদুপুরের দরিয়াপুর এলাকায় তৃণমূলের দুই দুষ্কৃতী দলের মধ্যে গুলি, বোমা নিয়ে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় একপক্ষের এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছেন। আহত অবস্থায় তিনি চিকিৎসাধীন মালদহ মেডিক্যালে।
ফের নতুন করে এলাকায় গুলি-বোমা নিয়ে লড়াইয়ের ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের প্রশ্ন, মাসখানেক ধরে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও কেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা বকুল শেখ ও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য জাকির শেখকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। এলাকায় শান্তি ফেরাতে হলে ওই দুই নেতাকে গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি তুলেছেন নওদা-যদুপুরের মানুষ। দু’জনকেই গ্রেফতার করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও এ দিনের ঘটনায় দলের কোনও বিষয় নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে দু’দলের মধ্যে গোলমাল হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। আর আমি আগেই বলেছি ওঁরা কেউ দলের সঙ্গে যুক্ত নন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এদিনের ঘটনায় আহতের নাম আইজুল শেখ। তিনি নওদা-যদুপুরের নয়াবস্তি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর মাথায় আঘাত লাগায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দুই দলের গোলমালের সঙ্গে আইজুলও যুক্ত থাকতে পারে। তাই তাকে হাসপাতালে পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘আহত ব্যক্তিকেও হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে তাঁকে জেরা করে তথ্য মিলতে পারে। আমরা পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। ’’
শুক্রবার রাত দশটা থেকেই কালিয়াচকের নওদাযুদুপুরের দড়িয়াপুর স্ট্যান্ডে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা বকুল শেখ ও তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য জাকির শেখের দলবলের মধ্যে আচমকা গুলি, বোমা নিয়ে লড়াই শুরু হয়ে যায়। জাতীয় সড়কের উপরেই দুই দলের দুষ্কৃতীরা গুলি, বোমা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে রেখে দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা দোকান বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। সেই সময় আইজুল শেখকে ঘিরে ধরে একদল দুষ্কৃতী। তাঁকে লক্ষ করে গুলি চালানো হলে মাথার ডান দিক ছুঁয়ে গুলি বেরিয়ে যায়। এছাড়া পরে তাঁকে ঘিরে ধরে আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। আইজুল বকুল শেখের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিন জাকির শেখের দলবল তাঁকে ঘিরে ধরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকুল ও জাকির শেখের মধ্যে দীর্ঘদিন বিবাদ থাকলেও ভোটের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় মাস খানেক ধরে সেই গোলমাল বন্ধ রয়েছে। ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পরে এলাকা ছেড়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তার ফলেই ফের অশান্তি শুরু হয়েছে বলে সন্দেহ বাসিন্দাদের।