বরফ-খেলা: টাইগার হিলের পথ ঢেকেছে বরফে। সেখানেই খেলায় মেতেছেন দুই পর্যটক। শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
আবার কবে বরফ দেখবে দার্জিলিং শহর? পর্যটক থেকে বাসিন্দা সবার মনেই এখন এই প্রশ্ন ঘুরছে। জিটিএর কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাংয়েরও সেটাই যেন প্রশ্ন। জিটিএ-র অনেকেই মনে করছেন বরফ পড়লে পর্যটকদের ঢল নামবে। আর তাতেই বাড়বে পর্যটন ব্যবসাও।
বিনয় তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, এমন একটা উপায় খুঁজতে যাতে কবে কোথায় বরফ পড়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা রয়েছে সেটা যেন কৌতূহলীরা জানতে পারেন। বিনয় বলেন, ‘‘জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের তরফ থেকে পর্যটকদের নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করার ব্যবস্থা হচ্ছে। কোনও সতর্কতামূলক বার্তা এবং আবহাওয়া সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য পর্যটন বিভাগ থেকে জানতে পারবেন পর্যটকরা।’’ একটি টোল ফ্রি নম্বর চালুর কথাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
উঁচু এলাকায় থাকা বরফের টানেই ভিড় এখন দার্জিলিংয়ের দিকে। বড়দিনের ছুটি চলছে, সোমবার বছরের শেষ। এখন বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজও। এই সময়টা আনন্দের মেজাজে কাটাচ্ছে বাঙালি। এর মধ্যেই এক দশক পরে শুক্রবার দার্জিলিংয়ে বরফ পড়ার খবর আনন্দ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। শনিবারও পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছে শৈলশহরে। শিলিগুড়ি, তরাই ও ডুয়ার্সের প্রচুর মানুষ এ দিন ছিলেন দার্জিলিংমুখী। কালিম্পং, লাভা, মিরিকেও পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতই। পর্যটকদের ঢল নামতেই পাহাড়ে একগুচ্ছ অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন জিটিএ-র প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। দার্জিলিং, কালিম্পং ও মিরিকে জিটিএ-র পক্ষ থেকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করা হবে বলেই জানিয়েছেন বিনয়।
জিটিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানের রূপরেখা তৈরিতে এ দিন সন্ধ্যায় লালকুঠিতে প্রশাসনিক বৈঠক করেন বিনয়। তিনি জানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ের ম্যাল, মিরিকের লেক সংলগ্ন মাঠ ও কালিম্পংয়ের মেলা গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠান হবে। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি কলকাতা, মুম্বই থেকেও শিল্পী আনার চিন্তাভাবনা চলছে। পাহাড়ের যে সব শিল্পীরা রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদেরও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান হবে। তবে অনুষ্ঠানের তারিখ ও সময় এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই জানিয়ছেন বিনয়।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া মন্ত্রকের অফিস রয়েছে সিকিমের গ্যাংটকে। সেখান থেকেও দার্জিলিংয়ের পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া মন্ত্রকের সিকিমের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘তুষারপাতের পূর্বাভাস তো সিকিমে দেওয়াই হয়। আপাতত পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সরে গিয়েছে অসমের দিকে।’’ পাহাড়ে উঁচু এলাকায় তুষারপাত হলেও দার্জিলিং, গ্যাংটকে এখন আর নতুন বরফ পড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।