জিটিএ-র চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবার আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ে সে কাজ নিজেদের বিদ্যুৎ দফতরের মাধ্যমে রূপায়িত করতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানাল জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)। রবিবার শিলিগুড়িতে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন জিটিএ-র চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা। সেখানেই তিনি মন্ত্রীর কাছে পাহাড়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় কাজ শুরু করার আবেদন করেন। মন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করে জিটিএ-কে ছাড়পত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে অনীত জানান। মন্ত্রী অরূপ পাহাড়ের উন্নয়নে রাজ্য সরকার সব রকম সাহায্য করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে, পাহাড়ের বিদ্যুৎ, জল এবং রাস্তার কাজ নিয়ে জিটিএ-কে সাহায্যের কথা বলেছেন।
সরকারি সূত্রের খবর, গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যে ‘মউ’ সই হয়েছে। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন গ্রিড মডার্নাইজ়েশন প্রজেক্ট’। রাজ্যে ১৩টি জেলায় দু’টি করে কাজ হবে। প্রথমত, ‘হাই ভোল্টেজ ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম’ তৈরি হবে। দ্বিতীয়ত, একাধিক ৩৩/১১ কেভি-র সাব স্টেশন তৈরি হবে। এর বাইরে বাছাই করা শহরে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড কেব্ল’ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১,১০০ কোটি টাকা। গোটা প্রকল্পের জন্য একটি ‘প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টিং ইউনিট’ (পিআইইউ) তৈরি হয়েছে। এক জন চিফ ইঞ্জিনিয়র পদমর্যাদার আধিকারিক ও কর্মীরা জেলায় জেলায় সমন্বয় করে কাজ করবেন। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে এঁদেরই কাজ করার কথা।
জিটিএ-প্রধান বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতর পাহাড়ে এখন জিটিএ-র নিয়ন্ত্রণে। সেখানে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের কাজ আমরা শেষ করেছি। সেখানে থেকে জিটিএ-কেই যাতে পাহাড়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকল্পের দায়িত্বে রাখা হয়, তা মন্ত্রীকে বলেছি। উনি রাজি হয়েছেন।’’ রাজ্যের সঙ্গে সুস্থ সম্পর্ক, পরিবেশ বজায় রেখে কাজ হলে আখেরে পাহাড়ের উন্নয়নে সুবিধা হবে বলে অনীত জানান।
জিটিএ সূত্রের খবর, তারা পাহাড়ে ইতিমধ্যে ‘গ্রিড মডার্নাইজ়েশন’-এর কাজ শেষ করেছে। এর বাইরে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা’য় কাজ হয়েছে। গ্রামীণ বিদ্যুৎ প্রকল্পে পাহাড়ের ২৫,৬৩৭টি বিপিএল পরিবার উপকৃত হয়েছে। আবার ‘রাজীব গান্ধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনা’য় ৬,৯৩২টি বিপিএল এবং ১,৪১৪টি এপিএল পরিবার জুড়েছে। ১৮৮টি গ্রামে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজ চলছে। সেখানে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকল্পের কাজ শুরু হলে পাহাড়ের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো আরও মজবুত হবে বলে জিটিএ-র প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানান। তাঁরা জানান, বিদ্যুৎমন্ত্রী ছাড়াও, সরকারের কাছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকল্পের কাজ করার জন্য লিখিত ভাবে আবেদনপত্রও পাঠানো হয়েছে।