(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। (ডান দিকে) হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
কখনও শুভেন্দু অধিকারী ‘তাঁর মতো’ নেতাদের ‘ঝুলিয়ে সিধে’ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কখনও তিনি শুভেন্দুকে মুর্শিদাবাদ গেলে ‘দেখে নেব’ বলেছেন। দিন কয়েক আগে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বলা ‘ঠুসে দেব’ মন্তব্য ঘিরে জোর শোরগোল হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। সেই শুভেন্দু যখন শনিবার মুর্শিদাবাদে, তখন হুমায়ুন যেন রণে ভঙ্গ দিয়েছেন!
কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে অশান্ত হওয়া মুর্শিদাবাদের এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে বাবা-ছেলে হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মোট ২০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন তিনি। তার পর মুর্শিদাবাদে যাবতীয় অশান্তির প্রেক্ষিতে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘মৃতদের পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর ১০ লাখ টাকা (ক্ষতিপূরণ) প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা ১০ লক্ষ টাকা করে দুই পরিবারকে দিয়েছি। তারা গ্রহণ করেছে। হিন্দুদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী ব্রাত্য। বিরোধী দলনেতাকে সকলে গ্রহণ করেছেন। প্রমাণ হয়ে গেল হিন্দুদের জন্য আমরা সবকিছু করতে পারি।’’ এত সবের মধ্যে হুমায়ুন অবশ্য ডাব খেতে ব্যস্ত। শনিবার তাঁর জেলায় শুভেন্দু রয়েছেন, এই কথা বলামাত্র রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সে পরে দেখা যাবে।’’
বস্তুত, শুভেন্দুকে নিয়ে মন্তব্য করে আবার এক বার দলের শো কজ়ের মুখে পড়েছেন হুমায়ুন। যদিও তার পরেও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। শুভেন্দুর একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হুমায়ুন বলেছিলেন, ‘‘আমাকে মারতে এলে রসগোল্লা খাওয়াব না কি? ঠুসে দেব।’’ তার পর দলের শো কজ়ের পর তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছিলেন, তিনি বিশেষ প্রসঙ্গে কথাগুলো বলেছিলেন। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কোনও অভিপ্রায় ছিল না তাঁর। সেই হুমায়ুনের ‘ঠান্ডা মেজাজ’ দেখে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ, ‘‘গীতাপাঠ কাজে আসছে মনে হয়।’’ বস্তুত, কিছু দিন আগে উপহারে পাওয়া গীতা মন দিয়ে পড়ছেন বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের ‘বিতর্কিত’ বিধায়ক। তিনি জানান, শুভেন্দু এমন অনেক ‘সনাতনী কথাবার্তা’ বলেন, যার যুতসই জবাব তাঁর কাছে থাকে না। সেই জন্য গীতা পড়ে জবাব খুঁজে রাখবেন তিনি। তাই শনিবার তাঁর জেলায় শুভেন্দুর সফরের পরেও হুমায়ুনের ‘নীরবতা’ তাঁর দলের অনেকের কাছেও ‘বিস্ময়কর’ ঠেকেছে।