রায়গঞ্জে ফের পুরনো বিবাদ

বৈঠকে সদ্য তৃণমূলে আসা সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিতে পারেননি অরিন্দমবাবুর অনুগামী বেশিরভাগ কাউন্সিলর। তাঁরা চেয়ারম্যান হিসেবে পাল্টা অরিন্দমবাবুর নাম ঘোষণা করেন। এরপরেই প্রবল হইহট্টগোল বেঁধে যায়। শুরু হয় ভোটাভুটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০৩:২৩
Share:

নতুন পুরপ্রধান কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা মেটেনি। বরং রায়গঞ্জে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই বেশি প্রকট হয়ে পড়েছে। কংগ্রেসের দুর্গ ভেঙে দেওয়ার জন্য দ্বন্দ্ব ভুলে সব নেতারা একজোট হয়েছিলেন। কিন্তু সাফল্য আসার পরেই ফের পুরোনো বিবাদ মাথা চাড়া দিয়েছে।

Advertisement

আইএনটিটিইউসির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অরিন্দম সরকারের সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের মতবিরোধ নতুন কিছু নয়। পুরসভা নির্বাচনের স্বার্থে দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে দুই গোষ্ঠীর নেতা ও কর্মীরা এক হতে বাধ্য হন। এ বারে অরিন্দমবাবুকে দল পুরসভার চেয়ারম্যান পদে প্রস্তাব না করায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের শুরু হয়েছে।

পুরসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টি ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়ে কংগ্রেসের দুর্গ ভেঙে দেন। কংগ্রেস দুটি ও বিজেপি একটি আসনে জয় পায়। সোমবার পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনের বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম অধিকারী চেয়ারম্যান হিসেবে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ বিশ্বাসের নাম প্রস্তাব করেন। পুরসভা নির্বাচনের মুখে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের ডান হাত বলে পরিচিত সন্দীপবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি অমলবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত।

Advertisement

বৈঠকে সদ্য তৃণমূলে আসা সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিতে পারেননি অরিন্দমবাবুর অনুগামী বেশিরভাগ কাউন্সিলর। তাঁরা চেয়ারম্যান হিসেবে পাল্টা অরিন্দমবাবুর নাম ঘোষণা করেন। এরপরেই প্রবল হইহট্টগোল বেঁধে যায়। শুরু হয় ভোটাভুটি। ১২টি ভোট পড়ার পর তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করে দেন তৃণমূল কাউন্সিলররা।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, দল ভাঙনে অভিযুক্ত সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান হওয়া থেকে রুখতে কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলরও চেয়ারম্যান পদে অরিন্দমবাবুকে ভোট দেন। যদিও সে কথা অস্বীকার করেছেন কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলর অরুণচন্দ্র চন্দ ও অনিরুদ্ধ সাহা। অমলবাবুর দাবি, দলের রাজ্য নেতৃত্ব সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান পদে প্রস্তাব করার জন্য কাউন্সিলরদের লিখিত ভাবে নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন। এখানে তাঁর কিছু করার নেই।

অরিন্দমবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘কে চেয়ারম্যান হবেন, তা নিয়ে অমলবাবু কাউন্সিলরদের সঙ্গে আগে কোনও আলোচনা করেননি। বৈঠকের মুখে সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান করার নিজের সিদ্ধান্তকে কৌশলে কার্যকরী করতে রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত বলে চালানোর চেষ্টা করেছিলেন অমলবাবু। রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।’’ অমলবাবুরও দাবি, ‘‘চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে কেউ দলবিরোধী মন্তব্য করলে রাজ্য নেতৃত্ব পদক্ষেপ করবেন।’’

এ দিকে, তৃণমূলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও দলীয় কোন্দলের জেরে চেয়ারম্যান নির্বাচন থমকে যাওয়ায় বিরক্ত শহরের বাসিন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement