ফাইল চিত্র।
অনীত থাপার নতুন দলের নাম হতে চলেছে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (জিপিএম)।
এই দলের নামের সঙ্গে জুড়তে পারে ‘অল ইন্ডিয়া’ শব্দ দু’টিও। শুক্রবার দুপুরে দার্জিলিঙে অনীতের মোর্চার গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নতুন দল তৈরির সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে। দলের নানা নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। শেষে রাতে কোর কমিটির টানা পর্যালোচনার পর নামটি চূড়ান্ত হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, বিমল গুরুং জনমুক্তির কথা বলেছিলেন ঘিসিং জমানার, আর অনীত প্রজাতন্ত্র শব্দটিকে বেছেছেন। পতাকার নকশা, রং বাছাই করার কাজও শেষ পর্যায়ে। দার্জিলিং থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাতের বৈঠকে। শনিবার অনীতের কথায়, ‘‘আমরা সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমে সব ঘোষণা করে দেব। তখনই নামও সামনে আসবে। দার্জিলিং পাহাড়ের রাজনীতির ইতিহাসে আমাদের নতুন সমীকরণ নতুন পথ দেখাবে।’’
কংগ্রেস, সিপিএম ছাড়া পাহাড়ের প্রথম আঞ্চলিক দল গোর্খা লিগ। ১৯৪৩ সালে ডম্বর সিংহ গুরুং দলটি গোর্খাদের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে তৈরি করে। এর পরে ১৯৮০ সালে উত্থান হয় সুবাস ঘিসিংয়ের। তিনি তৈরি করেন জিএনএলএফ। গোর্খা লিগের বহু নেতা তখন ঘিসিংয়ের সঙ্গে হাত মেলান। পাহাড়ের মূল দল হয়ে ওঠে জিএনএলএফ। ২০০৭ সালে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে জিএনএলএফ ভেঙে তৈরি হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
এর বাইরে পাহাড়ের উল্লেখযোগ্য দল বলতে সিপিআরএম। সিপিএমের সাংসদ রত্নবাহাদুর রাই দলের সঙ্গে মতবিরোধের পর পাহাড়ে আলাদা দলটি তৈরি করেন। বরাবর পাহাড়ে গোর্খাদের উন্নয়নের কথা বলে নতুন আঞ্চলিক দল গড়ার রীতি রয়েছে। গুরুং জমানার ১৪ বছরের মাথায় পাহাড়ে আবার আর একটি নতুন দল আসতে চলেছে।
২০১৭ সালের পাহাড় আন্দোলন, বিমল গুরুংয়ের পাহাড় ছাড়ার পর বিনয় তামাং, অনীত থাপারা মোর্চার নতুন গোষ্ঠী তৈরি করেন। গত জুলাই অবধি ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু বিনয় পদত্যাগ করার পর পরিস্থিতি বদল হয়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বিনয়পন্থী মোর্চা আর থাকছে না বলে ঘোষণা করা হয়। বিনয় তামাং দলীয় পতাকা গুরুংকে দিয়ে হাত মেলানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। সেখানে অনীত থাপা নিজের মতো করে বাকিদের নিয়ে নতুন পথ চলা শুরু করেছেন।
অনীতের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা জানান, এতদিন সব পাহাড়ি দল ব্যক্তিকেন্দ্রিক ছিল। সুবাস ঘিসিং, বিমল গুরুং সব।
অনীত চাইছেন, তিনি শুধু নয়— সবার পরিচয়েই দলটি তৈরি হোক। তাই ‘প্রজাতান্ত্রিক’ শব্দটি রাখা হয়েছে। এর আগেই নিজে সামনে না এসে বিনয় তামাংকে তিনি সভাপতি করেছিলেন।