রাজ্যপাল: মদনমোহন মন্দিরে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
তৃণমূল বরাবর অভিযোগ করেছে, বর্তমান রাজ্যপাল ‘বিজেপির এজেন্ট’। বৃহস্পতিবার কোচবিহার সফরে এসে এই প্রশ্নের মুখে পড়েন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, এই অভিযোগ কি ঠিক? জবাবে রাজ্যপাল পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘কে এই অভিযোগ করেছেন?’’ তাঁকে বলা হয়, তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম দেব। তা শুনে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘উনি কোভিড আক্রান্ত। তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’’
এর পরে কৌশলে প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘রাজ্যপাল দু’ভাবে কাজ করেন। এক, সরকারকে চিঠি লেখেন। দুই, ট্যুইট করেন। রাজ্যপালকে পোস্ট-অফিস বা রাবার স্ট্যাম্প ভাবা ঠিক নয়।” পরে অবশ্য শিলিগুড়িতে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমি সংবিধানের এজেন্ট।’’
ঘটনাচক্রে, এ দিন রাজ্যপালের কোচবিহার সফরের পুরো সময়টাই বিজেপি নেতা-সাংসদ ও তাদের কর্মী-সমর্থকদেরই ধনখড়কে ঘিরে ছিলেন। তৃণমূল তো নয়ই, এমনকি অন্য কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদেরও তাঁর কাছে দেখা যায়নি।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, "রাজ্যপাল নিরপেক্ষ নন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে কিছু হবে না। আর আইনশৃঙ্খলার বেহাল অবস্থা শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে একই অবস্থা।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি কেশব রায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিজেপি নেতার ভূমিকা পালন করছেন। তাই আমরা দেখা করিনি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিজেপির নেতাদের মতো কাজ করছেন। সে জন্যেই এই সব বলছেন।’’
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হেলিকপ্টারে কোচবিহার বিমানবন্দরে নামেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক তাঁর সঙ্গে মদনমোহন মন্দির, রাজবাড়িতে যান। পরে তিনি সার্কিট হাউসেও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে জেলা বিজেপি সভানেত্রী মালতী রাভা দেখা করেন। বিজেপির টিচার্স সেল, বিজেপি ঘনিষ্ঠ জিসিপিএ’র অনন্ত মহারাজ গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। ফিরে যাওয়ার পথে রাজ্যপাল ট্যুইট করেন, তাঁর সফরে জেলাশাসক দেখা করতে আসেননি, অর্থাৎ সরকারি প্রোটোকল মানা হয়নি। এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, সবাই এ দিন অন্য কাজে বাইরে ছিলেন।