ছবি: সংগৃহীত।
দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে দলকে নতুন করে চাঙা করতে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপরই ভরসা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়িতে দুই জেলায় সভাপতি বদলের ঘোষণা করেন পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস। সেই সঙ্গে তিনি জানান, ওই তিনটি জেলাতে দলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে গৌতমবাবুকে। তিনিই এখন থেকে তিনটি জেলার দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবেন। দার্জিলিঙের জেলা সভাপতি, মন্ত্রী ছাড়াও নতুন দায়িত্বে গৌতমবাবুর ক্ষমতা এবং গুরুত্ব দলে বাড়ল বলেই দলের অধিকাংশ মনে করছেন।
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গের জন্য গৌতমবাবুকে চেয়ারম্যান করে একটি কোর কমিটি গড়েছিলেন মমতা। সেই সময় গৌতমবাবু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি জেতার পর পর্যটন মন্ত্রী হন। ধীরে ধীরে কোর কমিটিটি কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এবার ভোটে উত্তরবঙ্গের ৭-০ হওয়ার পর থেকে জেলাগুলিতে রদবদল করা হবে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে, ওই তিনটি জেলার তিনটি আসনে বিজেপি ৫০ শতাংশের উপর ভোট পাওয়া শাসক শিবিরে চিন্তা বাড়ছিল। এই অবস্থায় গৌতমবাবুকে কোর কমিটির মাথায়, জলপাইগুড়িতে কৃষ্ণকুমার কল্যাণী এবং আলিপুরদুয়ারে মৃদুল গোস্বামীর মত পুরানো নেতাদের দায়িত্বে এনে মমতা দলকে ঘুরে দাঁড় করানোর রাস্তা বার করতে চাইছেন। গৌতমবাবু বলছেন, ‘‘দল, নেত্রী আমাকে যে দায়িত্বই দেবেন, তা পালন করার চেষ্টা করব। নতুন, পুরানো সবাইকে নিয়ে তৃণমূল পরিবার। সকলে নিয়েই দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’’
রাজ্য তৃণমূল সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহ ধরে গৌতমবাবুকে তিনটি জেলা কমিটির মাথায় বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা চলছিল। খোদ তৃণমূল নেত্রী দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের নেতাদের সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন। এ ছাড়াও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে বিভিন্ন নেতানেত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। দু’দিন আগেই শিলিগুড়ি শহরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের অধিকাংশ বিধায়কের মতামত শুনে তা নেত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোরের তিন জেলার একটি রিপোর্ট বলা হয়, গোটা উত্তরবঙ্গে পরিচিতি, দল এবং সরকারের কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন নেতাদের বাড়তি দায়িত্ব দিতে হবে। এই অবস্থায় গৌতমবাবু ছাড়া নেত্রী অন্য কোনও নাম ভাবেননি।