গৌতম দেব। ফাইল চিত্র।
নান্টু পালের বক্তব্য ‘ঠাকুরঘরে কে আমি কলা খাইনি’ বলার মতো— বুধবার এমনটাই জানালেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। বিধান মার্কেটে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পর্যটনমন্ত্রী বাজারের মধ্যে দাঁড়িয়েই ধমকধামক দিয়েছিলেন। তাতেই ক্ষুব্ধ নান্টু পাল। তিনি পরে জানান, মন্ত্রী যে প্রকাশ্যে বলেন, ‘অনেকে কোটি কোটি টাকা খাচ্ছে’, তাতেই তাঁর ও তাঁর স্ত্রীয়ের আত্মসম্মানে লেগেছে। সে প্রসঙ্গে এ দিন মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ্য করে বলিনি। নান্টুবাবু ‘ঠাকুরঘরে কে আমি কলা খাইনি’র মতো বললে হবে না। দলের বিষয়টি দলে আলোচনা হবে। তবে অবৈধ নির্মাণ করে কেউ শহরটাকে বেচে দিতে চাইলে তা আমি একবার কেন, হাজারবার, বারবার প্রকাশ্যেই বলব।’’
মন্ত্রীর কথায়, নান্টুকে নিয়ে কে কী বলেছেন, সংবাদমাধ্যমে কী ছাপা হয়েছে, তার দায় তিনি নেবেন না। দলের মধ্যে যে আলোচনা দরকার তা দলেই হবে। দলের কাউন্সিলর নান্টু পাল এবং তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী জানিয়েছিলেন, কারা কোটি কোটি টাকা খাচ্ছে, তা প্রকাশ্যে আনা হোক, না হলে তাঁদের পক্ষে আত্মসম্মান নষ্ট হচ্ছে। নান্টুর কথায়, মন্ত্রী প্রকাশ্যে যা বলেছেন, সেটা দলের বৈঠকে বলতে পারতেন। তাঁর অভিযোগ, অবৈধ নির্মাণের বিষয়টি তো কাউন্সিলর চৌকিদারি করতে পারবে না। এসজেডিএ কেন দেখছে না? নান্টুর কথায়, বারবার তিনি এসজেডিএ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেনও।
মন্ত্রীর কথায়, নান্টু ৩১ বছরের বেশি কাউন্সিলর রয়েছেন। তাই কারা কোটি কোটি টাকা খাচ্ছে, সেটা তিনিই ভাল খোঁজ নিতে পারবেন। তাই তাঁর কাছ থেকেই তালিকা চাইছেন। তালিকা না-দিলেও তিনি দেখে নেবেন। কিছু লোক মুনাফা করতে বেচে দিচ্ছে। তা আটকাতে জীবন উৎসর্গ করতেও করবেন মন্ত্রী। নান্টু বলেন, ‘‘মন্ত্রী কী বলেছেন, সেটা এখন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেই রয়েছে। দলের মধ্যে আলোচনা হলে জানাব। কারা কোটি কোটি টাকা নিয়েছে তা আমার জানা নেই।’’
এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বিজয়চন্দ্র বর্মন জানান, অবৈধ নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ জানার পরে তিনি নান্টুকে ডেকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি নান্টুকে নিয়ে পরিদর্শনে যাবেন বলেও ঠিক ছিল। এর পর তিনি কলকাতায় চলে যান। তার মধ্যে এই কাণ্ড!
সম্প্রতি বিধান মার্কেটে সাতটি দোকান আগুনে পুড়ে গেলে সেই জায়গায় ২০টি দোকান অবৈধভাবে তৈরির অভিযোগ ওঠে। মন্ত্রী পরিদর্শনে গেলে সঙ্গে ছিলেন নান্টু পাল। মন্ত্রী ঘটনাস্থলেই ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, অবৈধ নির্মাণ করে কিছু লোক কোটি কোটি টাকা মুনাফা করছে। এখানে কাউন্সিলর নান্টুর স্ত্রী এবং নান্টুকে ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে একাংশের দাবি। তার পরে মঙ্গলবার নান্টুর সাংবাদিক বৈঠক। অবৈধ নির্মাণ এবং নান্টুর ভূমিকা নিয়ে অবশ্য সমালোচনা করেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও।