অশান্ত চিস্তা। —ফাইল চিত্র।
গত অক্টোবরের শুরুতে কালিম্পং জেলার তিস্তায় তলিয়ে যাওয়া শতাধিক পরিবারের বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিটিএ৷ তবে এর জন্য রাজ্যের জমি জিটিএ-র হাতে হস্তান্তরের কাজ দ্রুত হওয়ার দাবি উঠল। গত শনিবার তিস্তা বাজারে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানে তিস্তাকে ঘিরে প্রশাসনের তৈরি ক্ষতি সমীক্ষা কমিটি, তিস্তা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সদস্যরা ছাড়াও একাধিক জিটিএ সদস্য ছিলেন। দ্রুত প্রক্রিয়া শেষের দাবি তোলেন দুর্গতেরা।
বৈঠকে কমিটির রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ১৩৮টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মধ্যে। কালিম্পং ১ নম্বর ব্লকে ১০১টি বাড়ি রয়েছে। লাভা ব্লকে ৩৭টি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়াও তিস্তার ১৯টি বাড়ির প্রাথমিক রিপোর্ট ছিল। সেখানে ৫টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নিজেদের জমি রয়েছে। সেই জমিতে কাজ শুরু করা হবে। এনএইচপিসি’র সঙ্গেও বাড়ি তৈরি নিয়ে জিটিএ প্রঝান অনীত থাপার আলোচনা হয়েছে। এখন প্রয়োজন দ্রুত জমি হস্তান্তর। জিটিএ প্রধান বলেন, ‘‘তিস্তা আমরা প্রথম থেকে মাঠে ময়দানে নেমে কাজ করেছি। এখন সরকারি সমীক্ষা, রিপোর্ট, অনুমোদন হয়ে কাজ হওয়ার কথা হচ্ছে। এর জন্য কিছু সময় লাগছে।’’ তিনি জানান, জিটিএ হাতে জমি নিয়ে কাজ হবে। আর এই সময়কে সামনে রেখেই কিছু লোক উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
কালিম্পং জেলা প্রশাসনের একটি প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে কমপক্ষে ৫৫০টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল। এর মধ্যে পুরোপুরি ক্ষতি থেকে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘরও রয়েছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৬০০ পরিবার ক্ষতির মুখে পড়েছিল। প্রশাসনের তরফে তা কলকাতায় জানানো হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্থ তিস্তা বাজার, রংপু'র পুর্নবাসন নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি দেখছে, আংশিক বাড়িগুলির মেরামত করার পরে পুরোপুরি ১৫০ মত বাড়ি তৈরি করতে হবে। এই বাড়িগুলি পুরোপুরি তলিয়ে গিয়েছে অথবা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত অক্টোবর থেকে প্রায় পাঁচ মাসে কাজ শুরু ন হওয়ায় একাংশ বাসিন্দা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তা নিয়ে প্রচারেও রয়েছে পাহাড়ের বিজেপি নেতারা। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই শনিবার বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে প্রত্যেক পরিবার ৭৫ হাজার টাকা, সন্তান্তদের পডাশুনোর বইপত্র, খাবার, ত্রাণও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার ২৫ কোটি টাকার ঘোষণা করলেও তা দিয়ে বাড়িঘর তৈরি নিয়ে সংশয় ছিল। পুরোটাই ত্রাণের টাকা হওয়ায় জটিলতাও দেখা দেয়। আবার জমি রাজ্যের হওয়ায় জিটিএ ঘর তৈরি করতে নামতে পারেনি। পরিস্থিতির জেরে কিছু বেকাদায় পড়ে দ্রুত এই সমস্যা মেটানোর জন্য কলকাতাতেও অনীত থাপা যোগাযোগ করেছেন। অনীতদের কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ২৫ কোটি টাকায় তো সব হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এখন টাকা, জমি কই গেল! খালি ভাষণ আর প্রতিশ্রুতি।’