একদিন: একসঙ্গে মন ঘিসিং ও মহেন্দ্র ছেত্রী। নিজস্ব চিত্র।
জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিং দল, নেতা-কর্মীদের তো বটেই, পাহাড়ের গোর্খাদের স্বপ্ন, দাবিদাওয়ার কথা ভুলে বিজেপির কাছে পুরো আত্মসমর্পণ করেছেন বলে অভিযোগ করে দল ছাড়লেন মহেন্দ্র ছেত্রী। মঙ্গলবার দলের সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র জানান. সুবাস ঘিসিংর দেখানো পথে দল আর নেই। এমনকি, দিল্লি থেকে বিজেপির কথায় দলের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া চলছে। এটা কোনও স্বতন্ত্র দল হতে পারে না। তাই এই দলের সঙ্গে পথ হাঁটা সম্ভব নয়।
তবে দলের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এ বার দলত্যাগী অজয় এডওয়ার্ড নয়, বরং বিমল গুরুং বা অনীত থাপার সঙ্গে আগামী দিনে তিনি পথ হাঁটবেন বলে মহেন্দ্র ইঙ্গিত দিয়েছেন। দলত্যাগী জিএনএলএফের সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘‘সভাপতি আর গোর্খাদের নিয়ে ভাবেন না। উনি শুধুমাত্র নিজের কথা ভাবেন। বিজেপির কলকাতা, দিল্লির নেতাদের কথায় ওঠবস করছেন। আমার দুই মোর্চার সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। দ্রুত আগামী পরিকল্পনা ঘোষণা করব।’’
দলীয় সূত্রের খবর, ২০০৭ সালের মোর্চা গঠনের পর পাহাড়ে সুবাস ঘিসিংয়ের ওঠা বন্ধ করে দেন বিমল গুরুং। স্ত্রীর শেষকৃত্যও তিনি পাহাড়ের বাড়িতে করতে পারেননি। সেই সময়ও মহেন্দ্র দলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। তরুণ বয়স থেকে ঘিসিংয়ের সঙ্গে ছিলেন। গুরুং জমানায় কার্শিয়াং মহকুমার ঘরবাড়ি ছেড়ে বহুদিন বাইরে ছিলেন। ২০১৭ সালের পর পাহাড়ে ফিরে দলের সংগঠন মজবুত করার কাজ করেন। সেই সময় অজয় এডওয়ার্ড এবং মহেন্দ্র মন ঘিসিংয়ের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। বিজেপির সঙ্গে দলের গাঁটছড়ার পর তাঁর সঙ্গে মনের দূরত্ব বাড়তে থাকে। কিন্ত কোনওদিন প্রস্তাব থাকলেও অন্য দলে যাননি।
ভোটে সমঝোতার নামে দলের প্রার্থী, প্রতীক না রেখে বিজেপির হাতে সংগঠন তুলে দেওয়া হয়েছে বলে মহেন্দ্র অভিযোগ করেন। সম্প্রতি অজয় এডওয়ার্ডের সঙ্গে তিনি দলের একাংশের কাজকর্মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি দলের একমাত্র সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও সম্প্রতি নীরজ জিম্বাকে মন ঘিসিং দলের সেক্রেটারি জেনারেল ঘোষণা করেন। এতে বোঝাই গিয়েছিল, মহেন্দ্রর মতো কট্টর জিএনএলএফ নেতার মেয়াদ দলে ফুরোতে চলছে।
দলের সেক্রেটারি জেনারেল তথা বিজেপির বিধায়ক নীরজ জিম্বা বলেন, ‘‘অনেকে ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের বাইরে যাচ্ছেন। এতে জিএনএলএফের সমস্যা হবে না।’’