Madhyamik Examination

বাবার স্বপ্নপূরণে পরীক্ষা

স্বজনহারা হয়েও রিঙ্কির মনের জোর দেখে কুর্নিস জানিয়েছেন প্রতিবেশী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

গাজল শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩৩
Share:

অবিচল: বাবার মৃত্যুর পরেও পরীক্ষা দিয়ে ফিরল রিঙ্কি। নিজস্ব চিত্র

আনাজ বিক্রেতা বাবার স্বপ্ন, পড়াশোনা করে যেন সরকারি চাকরি পায় তাঁর মেয়ে। মাধ্যমিক পরীক্ষার দু’ঘণ্টা আগে দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়েও তা-ই শোক ভুলে তাঁর স্বপ্নপূরণে পরীক্ষায় বসল রিঙ্কি রায়।

Advertisement

মঙ্গলবার গাজলের আলাল গ্রামপঞ্চায়েতের আহোড়া গ্রামের ঘটনা। স্বজনহারা হয়েও রিঙ্কির মনের জোর দেখে কুর্নিস জানিয়েছেন প্রতিবেশী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

পুলিশ জানিয়েছে, নিজের জমিতে চাষবাস করতেন অখিল রায় (৪৬)। তাঁর দুই মেয়ে। রিঙ্কি বড়। সে গাজলের আহোড়া বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের ছাত্রী। তার মাধ্যমিকের সিট পড়েছে গাজলের শিউচাঁদ পরমেশ্বরী বিদ্যামন্দিরে। এ দিন ছিল ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা। সকালে নিজের জমির আনাজ বাজারে বিক্রি করতে যান অখিল। মাঝরাস্তায় আহোড়া মোড়ে তাঁকে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে যান গাজল গ্রামীণ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। গাড়ি ও চালকের খোঁজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার ঘণ্টাদুয়েক আগে দূর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর খবর পায় রিঙ্কি। হইচই পড়ে এলাকায়। প্রথমে পরীক্ষা দিতে যেতে চায়নি রিঙ্কি। তার পরে নিজেই পরীক্ষা দিতে চায় সে। পরিবারের লোকেরা তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। বুধবার মাধ্যমিকের শেষ পরীক্ষা।

রিঙ্কি বলে, ‘‘বাবার ইচ্ছা ছিল আমরা দু’বোন ভাল করে পড়াশোনা করে সরকারি চাকরি পাই। আমাদের জন্য দিনরাত কাজ করত। ওর সেই স্বপ্ন তো পূরণ করতে হবেই।’’ রিঙ্কির মা রিনা বলেন, ‘‘দুই মেয়েকে নিয়ে কী ভাবে চলব বুঝতে পারছি না। সব শেষ হয়ে গেল।’’

অন্য দিকে এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ পরীক্ষাকেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়ে মানিকচকের ফিরদৌসি খাতুন। সে মানিকচক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার পরীক্ষার সিট পড়েছিল এনায়েতপুর ই এ হাইস্কুলে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেন মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কিছুটা সুস্থ হয় ফিরদৌসি। পরেই হাসপাতালের বিছানায় বসেই পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষাকেন্দ্রের সুপারভাইজার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘চিকিৎসার পরে ফিরদৌসি পরীক্ষা দিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করে। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement