তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন দল থেকে বহিষ্কৃত তৃণমূলের নকশালবাড়ি ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি গৌতম কীর্তনীয়া। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি অভিযোগ তোলেন, কংগ্রেসের মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির প্রার্থী শঙ্কর মালাকারের তফসিলি জাতির শংসাপত্র জাল বলে সরব হওয়ায় জেলা সভাপতি তাঁকে এ ব্যাপারে অভিযোগ তুলতে নিষেধ করেন। গৌতমবাবুর অভিযোগ, ‘‘রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। তিনিও তফলিসি জাতির শংসাপত্র জাল করেছেন বলে অভিযোগ। শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে তাই কিছু বললে তিনি পাল্টা রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে সরব হবেন বলে জেলা সভাপতি চুপ করে রয়েছেন। শঙ্করবাবু বিরুদ্ধে কিছু বলছেন না। আসলে তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা বুঝেছেন রঞ্জনবাবু শঙ্করবাবুকে জেতাতে চাইছেন।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ নিয়ে রঞ্জনবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘দলে যিনি নেই তাঁর বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। যা বলার ব্লকের নেতারাই বলবেন।’’
গৌতম কীর্তনীয়া গৌতম দেবের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছিলেন যে, শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে তিনিও তাঁকে নিষেধ করেছিলেন। তবে এ দিন তা নিয়ে তিনি আর কিছু বলতে চাননি। বস্তুত, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের তরফে অমর সিংহকে প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন গৌতম কীর্তনীয়া এবং তাঁর অনুগামীরা। অমরবাবু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে ওই কেন্দ্র থেকে গৌতম কীর্তনীয়াও মনোনয়ন জমা দিলে তা নিয়ে দলের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়। বিব্রত হন দলীয় নেতৃত্ব। মাটিগাড়া-নকশাবড়ি এলাকা থেকে অমরবাবুর অনুগামীরা দাবি তোলেন, গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে জেলা নেতৃত্ব ব্যবস্থা না নিলে বাসিন্দাদের মধ্যে ভুল বার্তা যাবে। সে কারণে দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিক জেলা নেতৃত্ব। দলের মধ্যে এই কোন্দলের জেরে তৃণমূলের ক্ষতি হবে বলেও অনেকে আশঙ্কা করেন। এর পরেই গত ২ এপ্রিল দল বিরোধী কাজের অভিযোগে গৌতমবাবুকে বহিষ্কার করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি কোনও দলবিরোধী কাজ করেননি বলে দাবি করেন গৌতমবাবু। বরং রঞ্জনবাবুই দলবিরোধী কাজ করছেন বলে তাঁর অভিযোগ। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কেন আমি নির্দল হয়ে দাঁড়াতে চাই তা আগেও লিখিত ভাবে রঞ্জনবাবুকে জানিয়েছিলাম। তিনি সে সময় আমাকে জানাতে পারতেন। তিনি পক্ষপাতিত্ব করে যাকে ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছেন, তাতে কতটা ইতিবাচক ফল হবে তা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার সংশয় রয়েছে। তা ছাড়া রিসর্ট, হোটেল, রেস্তরাঁতে বসে দলের বৈঠক করে জেলা সভাপতি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তিনি দলের সব চেয়ে বেশি ক্ষতি করছেন।’’ নকশালবাড়ি ব্লকের আইএনটিটিইউসি-র নেতা নির্জল দে জানান, এলাকায় গৌতম কীর্তনীয়ার কোনও প্রভাব নেই। তিনি নির্দল হিসাবে দাঁড়ালেও মানুষের কোনও সমর্থন পাবেন না।