পুরবোর্ডে যোগদানের ইচ্ছে প্রকাশ করে কংগ্রেস মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করায় দু’পক্ষের বিরুদ্ধে নৈতিকতা বিসর্জন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। কংগ্রেস-সিপিএমের গোপন আঁতাত প্রকাশ্যে চলে আসা নিয়ে শনিবার কটাক্ষ করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূল প্রচারে নামবে বলে জানান।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেস-সিপিএমের গোপন আঁতাত সামনে আসুক আমরা চাই। আরও প্রকাশ হোক। সিপিএম এখন অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে। নীতিহীনতায় ভুগছে। কিছুদিন পরে তাদের মিউজিয়ামে দেখতে পাওয়া যাবে।’’ তাঁর দাবি, এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করে বোর্ড চলছে। দেশে, রাজ্যে কোথাও সিপিএমের এই নীতি নেই। তাঁর প্রশ্ন, এটা কী শিলিগুড়ির জন্য আলাদানীতি? আসলে সিপিএম নীতিহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের জবাব, ‘‘আমাদের নীতি নিয়ে মন্ত্রীকে ভাবতে হবে না। তিনি তাঁদের নীতি নিয়েই ভাবুন। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের এক সদস্যকে তৃণমূল সমর্থন করেছেন সেটা কোন নীতি? নির্বাচনে না-জিতেও দল ভাঙছেন সেটা কোন নীতি?’’ সিপিএমের প্রতি পর্যটনমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যসভায় সিপিএমের একজন প্রতিনিধিও থাকল না। ত্রিপুরা থেকে উৎখাত হয়েছে। কেরলে তো বাসিন্দারা এক বছর পর সরকার পরিবর্তন করে। সেখান থেকেও সিপিএম মুছে যাবে।’’ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ, ‘‘কংগ্রেস নিজেদের অস্তিত্ব আগেই বিপন্ন করেছে।’’ কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটকের দাবি, ‘‘২০১৩ সালে কী হয়েছিল শহরবাসী সকলেই টের পেয়েছেন। বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল। সে কথা ভেবেই আমরা গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
ওই সময় যৌথ পুরবোর্ড ভেঙে তৃণমূল বেরিয়ে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় কংগ্রেস। বাজেট পাশের সময় তৃণমূল এবং সিপিএম সমর্থন না-দিলে বোর্ড ভেঙে যায়। প্রশাসক বসে। বর্তমানে পুরবোর্ডে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় বাম বোর্ডকে সরাতে সক্রিয় তৃণমূল। বাজেট সমর্থন না-করতেও তারা আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস বোর্ডে যোগ দিলে সেই সম্ভাবনা থাকবে না। বামেদের একাংশের অভিযোগ, তা বুঝতে পেরেই আফসোসে তৃণমূল এ সব বলছে। কংগ্রেসের দাবি, গত বছর তারা বাজেট সমর্থন করার পরও তৃণমূলের ওয়ার্ডগুলোতে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়। ‘শূন্য বর্জ্য’ প্রকল্পের পাইলট প্রজেক্ট একটি তৃণমূলের এবং একটি বামেদের ওয়ার্ডে চালু হয়। অভিযোগ, তৃণমূল তলে তলে বাম বোর্ডের সঙ্গে যোগ রেখে চলছে। আর কংগ্রেস সমর্থন দিয়েও গুরুত্ব হারাবে তা হয় না।
এ বার বাজেট পাশ করাতে সমর্থন চাইলে কংগ্রেস সংশোধনী আনা ছাড়াও বোর্ডে অংশ নিতে চেয়েছে। মেয়র রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। আগামী ২৮ মার্চ কাউন্সিলদের নিয়ে কলকাতায় গিয়ে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান মেয়র। রাজ্যের কাছে পুরসভার প্রাপ্য অর্থ আদায়ের দাবি জানাবেন। বোর্ডে যোগ দিতে কংগ্রেসের প্রস্তাবটি নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বে সঙ্গেও কথা বলবেন।