শিলিগুড়িতে বিশ্বকর্মাকে টেক্কা দিচ্ছে সিদ্ধিদাতা 

ঘটনা হল, দেড় দশক আগেও শিলিগুড়িতে গণেশ পুজোর তেমন চল ছিল না। শহরের সবজি মান্ডিতে ভোঁসলে বাড়িতে বড় মাপের গণেশ পুজো হয়। ১১ বছর আগে বিধান মার্কেটে মহা সমারোহে গণেশ পুজো শুরু হয়।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

ব্যস্ত কুমোরটুলি। নিজস্ব চিত্র

আচমকাই যেন ‘বাবা বিশ্বকর্মা’কে টপকে গিয়েছেন ‘সিদ্ধিদাতা গণেশ’! সংখ্যায় এবং আকারেও। শিলিগুড়ির কুমোরটুলিতে এই মুহূর্তের ছবি সে কথাই বলছে।

Advertisement

কারণ, গত বছর অবধি অগস্টের শেষে কুমোরটুলিতে মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত ছিলেন বিশ্বকর্মা ঠাকুরের মূর্তি গড়া নিয়ে। সেখানে প্রায় সকলেই সিদ্ধিদাতা তৈরিতে মনোযোগী। শিলিগুড়ির কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের সংগঠনের সম্পাদক অশোক পাল বলেন, ‘‘এ বার গণেশ পুজোর বাতাস আচমকাই জোরাল হয়েছে। গত বছর শ’দুয়েক বিশ্বকর্মা ঠাকুরের মূর্তির বরাত ছিল। এবং শ-দেড়েক গণেশ ঠাকুরের মূর্তির বরাত ছিল। এবার বিশ্বকর্মা ঠাকুরের বরাত একইরকম। কিন্তু সিদ্ধিদাতার বরাত ২৪০ ছাড়িয়েছে।’’ বিশ্বকর্মা মূর্তি খুব উঁচু হয় না। কিন্তু, সিদ্ধিদাতার মূর্তি কোনও কারিগর করছেন ৯ ফুট, কেউ ১১ ফুট। কেউ ১৪ ফুট!

ঘটনা হল, দেড় দশক আগেও শিলিগুড়িতে গণেশ পুজোর তেমন চল ছিল না। শহরের সবজি মান্ডিতে ভোঁসলে বাড়িতে বড় মাপের গণেশ পুজো হয়। ১১ বছর আগে বিধান মার্কেটে মহা সমারোহে গণেশ পুজো শুরু হয়। পুলিশের হিসেব বলছে, ২০১৪ সালের পরেই গণেশ পুজোর অনুমতির জন্য আবেদন বেড়ে যায়। কুমোরটুলির প্রবীণ মৃৎশিল্পীদের কয়েকজন জানান, ২০১৭ সালে এক ধাক্কায় শহরে পুজোর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। গত বছর তা আরও বেড়ে যায়। এবারে শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডেই কমবেশি ৪টি করে নানা মাপের পুজো হচ্ছে। শুধু হংকং মার্কেট এলাকায় ৩টি গণেশ পুজো হচ্ছে। শহরের বাণিজ্যিক এলাকা বলে পরিচিত খালপাড়ায় তিনগুণ গণেশপুজো বেড়েছে। সেবক রোড, চম্পাসারি, বাগডোগরা, মাটিগাড়া। খড়িবাড়ি, নকশালবাড়িতেও গণেশ বন্দনায় আগ্রহীর সংখ্যা বেড়েছে।

Advertisement

শিলিগুড়ির মেয়র তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য পুজোর উদ্বোধনে যান না। কিন্তু, নতুন পুজোর জন্য আবেদন পড়লে ছাড়পত্র দিতে আপত্তি করেন না তিনি। অশোকবাবু বলেন, ‘‘এবারই তো কয়েকটি নতুন গণেশ পুজোর অনুমতির জন্য পুরসভার ছাড়পত্র চেয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। এককথায় দিয়েছি।’’ তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব কিন্তু, বড় মাপের অধিকাংশের পুজোর উদ্বোধন করে থাকেন। এবারও করবেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবারই কিছু গণেশ পুজোর উদ্বোধন করি। ভক্তি-নিষ্ঠা, সম্মিলিত উদ্যোগ দেখে ভালই লাগে। এর মধ্য রাজনীতির যোগসূত্র নেই।’’ বিজেপির দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘গণেশ বন্দনায় আগ্রহ বেড়ে যাওয়াটা শুভ লক্ষণ। আমরা ছোট-বড়-মাঝারি সব কমিটিকে শুভেচ্ছা জানাতে যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement