মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি সভার আগে বিনা অনুমতিতে বিক্ষোভ সভা করার অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেন চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর), ফরওয়ার্ড ব্লকের গোয়ালপোখর লোকাল কমিটির সম্পাদক জইনুল হক এবং ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্রে দলের পরাজিত প্রার্থী সইফুর রহমান। গত সোমবার অভিযুক্ত ওই তিন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ইসলামপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়ায় আদালত ব্যক্তিগত ৪০০ টাকা করে বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ২৯ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়ালপোখরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। ওই সভার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে চাকুলিয়ার বিধায়ক ভিক্টরবাবু সহ দলের নেতা কর্মীদের একাংশ গোয়ালপোখরের দেবীগঞ্জ, সাহাপুর ও মজলিশপুর এলাকায় উত্তরবঙ্গ অধিকার মঞ্চের নামে একাধিক বিক্ষোভ সভা করেন। ওই সভাগুলিতে তাঁরা রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচের হাসপাতাল কল্যাণীতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে উত্তরবঙ্গের কোথাও এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবি জানান। প্রতিটি সভাতেই আন্দোলনকারীরা মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের কাজকর্মের বিরুদ্ধে সরব হন। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীরা গোয়ালপোখরের বিভিন্ন এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সহ হোর্ডিংয়ের উপরে উত্তরবঙ্গে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবিতে পোস্টারও সাঁটিয়ে দেন। গত ২৭ ডিসেম্বর গোয়ালপোখর থানার পুলিশ ভিক্টরবাবু, জইনুলবাবু ও সফিউরবাবুর বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের বাধা সৃষ্টি করা, মারধর, বেআইনি জমায়েত, পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে সভা করার অভিযোগে জামিনযোগ্য ৩৪১, ৩২৩, ১৪৩, ১৮৮ ও ২৮৩ ধারায় মামলা দায়ের করে। সম্প্রতি, পুলিশ ওই মামলার চার্জশিট জমা দেয় আদালতে। এরপরেই আদালত অভিযুক্তদের আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়ে সমন পাঠায়।
ভিক্টরবাবুর অভিযোগ, চাকুলিয়া ও গোয়ালপোখর বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে ফরওয়ার্ড ব্লকের মোকাবিলা করতে পারছে না। সে কারণেই, বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তাঁকে ও ফরওয়ার্ড ব্লকের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণভাবে সভা করলাম। অথচ পুলিশ আমাদের বিরুদ্ধে মারধরের ধারা দিল।’’