ফাইল চিত্র।
আমি প্রণবদাকে প্রথম দেখি ’৭৪ সালে। কেন্দ্র থেকে এ রাজ্যের জন্য এফসিআই-এর চালের বরাদ্দ বৃদ্ধি করবার আবেদন নিয়ে প্রিয়দার (প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি) পরামর্শে যুব কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছি। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী ফকরুদ্দিন আলি আহমেদকে দেওয়ার জন্য স্মারকলিপিটি প্রণবদাই লিখে দেন। তিনি তখন কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী। ’৭৮-এ অসম-নাগাল্যান্ড সীমানায় সংঘর্ষের ফলে বহু মানুষ যখন ঘর ছাড়া, বনেজঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন, নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি থেকে প্রণবদা সেই উপদ্রুত এলাকা দেখতে যান, সঙ্গী আমি। তার সঙ্গে থেকেছি সাত, সাতটি দিন।
তাঁর স্নেহের প্রমাণ পেয়েছি বহুবার। ২০০৬-এ বিধানসভার প্রার্থী হওয়া ছিল আমার কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। জেলা কংগ্রেস, প্রদেশ কংগ্রেস— কেউই চায়নি, আমি প্রার্থী হই। প্রণবদা এইসব আপত্তি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “হারুক, জিতুক, মিঠু নিজের শহর থেকে বিধানসভার প্রার্থী হতে চাইলে না বলার অবকাশ নেই।’’
জলপাইগুড়ির পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপকদা (ভৌমিক) একদিন সকালবেলা ফোন করে উত্তেজিত হয়ে বললেন, “মিঠু, প্রণববাবুর বইয়ের (দি ড্রামাটিক ডিকেড) ১৩১ পাতায় তোমার কথা লিখেছে।’’
আমি শুনে অভিভূত। যে মানুষটি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি, তিনি আত্মজীবনী লিখতে গিয়ে আমায় মনে রেখেছেন, এ তো পরম প্রাপ্তি। তিনি ডেপুটি চেয়ারম্যান না হলে যোজনা কমিশন কত জনমুখী হতে পারে, আমরা জানার সুযোগ পেতাম না। শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস এই বিভাগের বরাদ্দ অর্থেই তৈরি।
(কংগ্রেস নেতা, প্রাক্তন সাংসদ)