সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যাচ্ছে নার্সিংহোমের করিডরে চিকিৎসকের কলার ধরে টানছেন বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত। ফুটেজ দেখিয়ে নার্সিংহোমের দাবি, সঞ্জয়বাবু চিকিৎসককে মারছেনও। আবার কখনও তাঁকে ঠেলে, ধাক্কা মেরে রোগিণীর কেবিনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। নিরাপত্তারক্ষীরা কখনও বাধা দিতে চাইছেন। নার্স, অন্য চিকিৎসক, লোকজন ছোটাছুটি চলছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাটিগাড়ার ওই নার্সিংহোমের এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার ওই রেঞ্জ অফিসারের শাস্তির দাবিতে সরব হলেন কর্তৃপক্ষ। নার্সিংহোমের ডেপুটি সুপার কৌশিক মজুমদার, চিকিৎসক আনন্দব্রত বসু, সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ, ‘‘রোগিণীর দাদা তথা রেঞ্জার সঞ্জয়বাবু, মহিলার স্বামী সুমন মিত্র চিকিৎসক কল্যাণ দেবকে অন্যায় ভাবে মারধর করেছেন। ভুল থাকলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন।’’
সঞ্জয়বাবুর বিরুদ্ধে তাঁরা অভিযোগ তোলেন, পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের নাম করে চিকিৎসকের হুমকি দেওয়ার। নার্স বোঝাতে গেলে তাঁকেও ধাক্কা দিয়ে মুখ বন্ধ করে থাকতে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়েও চিকিৎসকেরা উদ্বিগ্ন বলে জানান। বুধবার নার্সিংহোম এবং প্রহৃত চিকিৎসকের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
পাল্টা অভিযোগ করেছেন রেঞ্জার সঞ্জয়বাবুও। পুলিশের তরফে সঞ্জয়বাবুর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, মারধর, জখম করা, ভাঙচুরের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সঞ্জয়বাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে সঙ্গে তাঁর দিদিকে ধাক্কা দেওয়া, শ্লীলতাহানি, হমকি দেওয়া, মারধরের অভিযোগ হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেযেই মামলা রুজু করে তদন্ত হচ্ছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’
সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘মন্ত্রী হিসাবে গৌতমবাবুর নাম জানি। তাঁর সঙ্গে কোন দিন কথাও হয়নি। প্রভাব খাটানোর মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ পর্যটনমন্ত্রী জানান, তিনি ওই রেঞ্জারকে চেনেন না। কেন চিকিৎসক এমন কথা বলছেন খোঁজ নেবেন। অভিযোগ হওয়ায় পুলিশ দেখবে।
মারধরের অভিযোগ নিয়ে সঞ্জয়বাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘রোগিণীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর এসেও চিকিৎসক জোর করে রোগী না দেখে চলে যেতে চাইলে রোগী দেখে যেতে বলেছি। উত্তেজিত হয়ে ধাক্কা দিয়ে কেবিনে নিতে চেয়েছি। মারধর করিনি।’’ পরে নার্সিংহোমের তরফে সঞ্জয়বাবুর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মেটানো হয় বলে দাবি। তার ভিডিও ফুটেজ কেন দেখানো হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তুলেছেন রোগিণীর পরিজনেরা।